কোথায় হারালেন ফ্যান?
ধরা যাক ক্যালিফোর্নিয়ায় লাল কার্পেটে হাঁটলেন কোনো হলিউডের অভিনেত্রী ও মডেল। এরপরই তিনি নাই হয়ে গেলেন। ব্যাপারটি সিনেমার গল্প মনে হলেও চীনের একজন মডেল ও অভিনেত্রীর ক্ষেত্রে তা–ই ঘটেছে। চীনের ওই মডেলের নাম ফ্যান বিংবিং।
শুধু চীনেই নন, বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ও বিখ্যাত অভিনেত্রীদের মধ্যে ফ্যান একজন। গত জুন থেকেই তাঁকে জনসমক্ষে আর দেখা যাচ্ছে না। সর্বশেষ তাঁকে জুনের প্রথম সপ্তাহে জনসমক্ষে দেখা গিয়েছিল। এরপরই তাঁর বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগ ওঠার পরই হুট করেই নিখোঁজ তিনি। তিনি নিজেই সরে আছেন, নাকি সরকারের কেউ না অন্য কেউ তাঁকে তুলে নিয়ে গেছে, তা জানা যায়নি। তবে সরকারের পক্ষ থেকে ফ্যানের ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি।
এর আগে ২০১১ সালেও চীনের এক শিল্পীকে পাওয়া যাচ্ছিল না। এরপরই ‘কর ফাঁকি’ দিয়েছেন মর্মে স্বীকারোক্তি দেওয়ার পরই তিন মাস পর খোঁজ মেলে ওই শিল্পীর।
এ বছরের জুনের প্রথম দিকে তিব্বতে একটি শিশু হাসপাতাল দেখতে যান ফ্যান। এর ছবি ফ্যান নিজের ভ্যারিফাইড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্টও করেন। এরপর তাঁকে আর জনসমক্ষে দেখা যায়নি।
মডেল, অভিনেত্রী ও গায়িকা হিসেবে ফ্যান শোবিজ জগতে অনেক পরিচিত নাম। ‘আয়রন ম্যান’ ও ‘এক্স ম্যান’ ফ্র্যাঞ্চাইজির তারকাকে ২০১৫ সালে টাইম ম্যাগাজিন ‘জনপ্রিয় অভিনেত্রী’র তকমা দেন। টুইটার ও চীনা সামাজিক মাধ্যম ওয়েইবোতে তার ফলোয়ার ৬ কোটি ৫০ লাখের বেশি। লালগালিচা, মুভি প্রিমিয়ার ও ফ্যাশন শোতে সরব উপস্থিতির জন্য তাকে ‘ফ্যাশন আইকন’ ও ‘মহারানি’ বলা হয়ে থাকে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বলছে, চীনা সরকার ফ্যানকে আটকে রেখেছে। ২৮ জুলাই চীন তার দেশ ছাড়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে। কেউ বলছেন, চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সমালোচনা করা তারকাদের ওপর প্রশাসন কড়া নজরদারি চালায়। ফ্যান বিংবিংও কমিউনিস্ট পার্টির রোষানলে শিকার। আবার অনেকে বলছেন, কার ফাঁকির কারণে আত্মগোপন আছেন তিনি। চীনের একটি ট্যাবলয়েডের এক খবরে ফ্যান বিংবিংয়ের কর ফাঁকির কথা বলা হয়েছে।
ফ্যান বিংবিংয়ের নিখোঁজের ফলে বিড়ম্বনায় পড়ছেন তাঁর ছবির পরিচালকেরা। চীনা চলচ্চিত্র ‘আনব্রেকেবল স্পিরিট’র মুক্তি আগস্টে থাকার কথা থাকলেও তা অক্টোবর পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।
২০১৬ সালে বিশ্বের সেরা পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত অভিনেত্রীর তালিকায় পেছনে ফেলেছেন অ্যাঞ্জেলিনা জোলিকে। ওই তালিকায় তাঁর স্থান ছিল পঞ্চম। ২০১৩ সাল থেকে ফোর্বসের সেরা ১০০ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত চীনা শিল্পীদের মধ্যে তিনি অন্যতম। ২০০৬ সাল থেকেই এই তালিকার সেরা ১০-এ আছে ফ্যানের নাম। তথ্যসূত্র: সিএনএন ও হাফিংটন পোস্ট।