খাসোগির মতো কানাডায় হত্যা মিশন

বিন সালমান ও সাদ আলজাবরি
বিন সালমান ও সাদ আলজাবরি

সৌদি আরবের রাজপরিবারের কট্টর সমালোচক সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যার কয়েক সপ্তাহ পর দেশটির আরেক ভিন্নমতালম্বীকে হত্যার জন্য কানাডায় একটি দল পাঠিয়েছিলেন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। যাঁকে হত্যার চেষ্টা করা হয়, তাঁর নাম সাদ আলজাবরি। সৌদি আরবের গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক এই কর্মকর্তা গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালতে যুবরাজ মোহাম্মদসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। সেই মামলায় এই অভিযোগ করেন তিনি।

২০১৮ সালের ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি আরবের কনস্যুলেটের ভেতর খুন হন ওয়াশিংটন পোস্ট–এর কলাম লেখক সৌদি নাগরিক খাসোগি। আলোচিত ওই হত্যাকাণ্ডে যুবরাজ মোহাম্মদ সালমানের হাত রয়েছে বলে মনে করা হয়। ওই হত্যাকাণ্ডের দায়ে সৌদি আরবের ৫ কর্মকর্তার ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয় গত বছর। চলতি বছর খাসোগির সন্তানেরা তাঁদের ক্ষমা করে দেন।

>

খাসোগি হত্যার পর সৌদির সাবেক এক গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে হত্যায় কানাডায় লোক পাঠান যুবরাজ সালমান।

ওয়াশিংটনের একটি ফেডারেল আদালতে করা মামলায় কানাডায় স্বেচ্ছানির্বাসনে থাকা সাদ আলজাবরি অভিযোগে বলেন, জামাল খাসোগির মতো একইভাবে তাঁকে হত্যার জন্য কানাডায় একটি ‘হিট স্কোয়াড’ পাঠিয়েছিলেন যুবরাজ মোহাম্মদ। এখনো তাঁকে বিচার বহির্ভূতভাবে হত্যার চেষ্টা করছেন যুবরাজ। তাঁকে হত্যা করার কারণও জানিয়েছেন সৌদি আরবের এক সময়কার প্রভাবশালী গোয়েন্দা কর্মকর্তা আলজাবরি। তিনি বলেন, যুবরাজ সালমান তাঁকে মৃত দেখতে চান। কারণ, তিনি তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও যুবরাজ মোহাম্মদ বিন নায়েফের খুবই ঘনিষ্ঠ। যুবরাজ সালমানের কুকর্মের বিষয়ে তিনি বেশ ওয়াকিবহাল। যুবরাজের কর্মকাণ্ডের তথ্য ফাঁস হয়ে গেলে ওয়াশিংটন ও রিয়াদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে টানাপোড়েনের সৃষ্টি হতে পারে। এতে মার্কিন সরকারের কাছে যুবরাজের ভাবমূর্তি নষ্ট হতে পারে।

২০১৭ সালে মোহাম্মদ বিন নায়েফকে যুবরাজের (ক্রাউন প্রিন্স) পদ থেকে ক্ষমতা দখল করেন বর্তমান বাদশাহ সালমানের ছেলে মোহাম্মদ বিন সালমান। পরে নায়েফকে গৃহবন্দী করা হয়। ওই সময় আলজাবরি বিদেশে ছিলেন। রিয়াদে থাকা তাঁর সন্তানদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর আলজাবরি আর দেশে ফেরেননি। তাঁর আশঙ্কা, দেশে ফিরলে নায়েফের মতো তাঁরও একই পরিণতি ভোগ করতে হবে। ফলে কানাডায় বসবাস করা এক ছেলের কাছে চলেন যান আলজাবরি।