চীনে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের আশ্বাস উনের

চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন। ছবি: রয়টার্স।
চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন। ছবি: রয়টার্স।

ওয়াশিংটন ও সিউলের সঙ্গে ঐতিহাসিক সম্মেলনের আগে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নে বেইজিংয়ে সফর করলেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন। এ সময় চীনকে তিনি আশ্বাস দেন, কোরীয় উপদ্বীপ ‘পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণে অঙ্গীকারবদ্ধ’। ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর প্রথম বিদেশ সফরে চীন গেলেন কিম।

কিম জং-উন চীন সফরে যাবেন—এমন গুঞ্জন কিছুদিন ধরেই চলছিল। সে গুঞ্জন সত্যি হয়েছে। চলতি সপ্তাহে রোববার তিনি স্ত্রী রি সল জুকে নিয়ে চীন সফরে যান। সেখানে তাঁদের গার্ড অব অনারসহ দেওয়া হয় জাঁকালো অভ্যর্থনা। গতকাল মঙ্গলবার দেশে ফেরার পর দুই দেশ থেকে সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ কিম জং-উনের বরাত দিয়ে বলে, উত্তর কোরিয়া ও চীনের সম্পর্কের মূল্য দেওয়া এবং যুগ যুগ ধরে এই সম্পর্ক বহাল রাখা আমার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।

কেসিএনএ জানায়, পিয়ংইয়ং যাওয়ার আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন সি। তিনি গেলে তা হবে ক্ষমতাগ্রহণের পর উত্তর কোরিয়ায় তাঁর প্রথম সফর।

চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার খবরে জানানো হয়, কিম ক্ষমতায় আসার পর এই দুই নেতার দেখা হয়নি। কিন্তু সি দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক উন্নয়নের ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, এটি একটি ‘কৌশলগত উপায় ও একমাত্র সঠিক উপায়’। চীনের নেতা বলেছেন, ‘নতুন এই পরিস্থিতিতে’ তিনি কিমের সঙ্গে সম্পর্ক বহাল রাখতে চান।

দুই রাষ্ট্রপ্রধান নিজ নিজ প্রতিনিধিদের নিয়ে গ্রেট হল অব দ্য পিপলে বৈঠক করেছেন। টেলিভিশন ফুটেজে দেখা যায়, কিম সেখানে খুঁটিনাটি বিষয় নিয়েও অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে কথা বলছেন।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, সি কিমের কাছে নিশ্চিত হতে চাইছিলেন, কিম যেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কোনো চুক্তিভঙ্গ না করেন। কারণ, এতে আগামী মাসে হতে যাওয়া শীর্ষ সম্মেলনে চীনের স্বার্থ বিঘ্নিত হতে পারে।

উত্তর কোরিয়ার প্রধান অর্থনৈতিক মিত্র চীন। দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরিকল্পিত শীর্ষ বৈঠকের আগে দেশটি বেইজিংয়ের সঙ্গে আলোচনা করে নেবে, এমন ধারণা অনেকটা প্রত্যাশিত ছিল বলে জানিয়েছে বিবিসি।

ওয়াশিংটনভিত্তিক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের চীনবিষয়ক বিশেষজ্ঞ বনি গ্লেসার বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এই সময়ে কিম ও সি মনে করেছেন, পরামর্শ করার এটাই উপযুক্ত সুযোগ। তাঁরা অনুধাবন করেছেন, সম্পর্কের আরও অবনতি হলে ক্ষতি হবে।

সিনহুয়ার খবরে বলা হয়, কিম জং-উন বলেছেন, ‘দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র যদি শুভ মনোভাব নিয়ে আমাদের উদ্যোগে সাড়া দেয়, প্রগতিশীল ও যুগপৎ পদক্ষেপ নিয়ে শান্তি ও স্থিতিশীলতার একটি পরিবেশ গড়ে তোলে, তাহলে কোরীয় উপদ্বীপের পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ বিষয়টির সমাধান হতে পারে।’