ছবি দেখার সুযোগ মিলল সৌদি নাগরিকদের
দীর্ঘ ৩৫ বছর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর সৌদি আরবে শুরু হয়েছে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শনী। গত শনিবার একটি অস্থায়ী প্রেক্ষাগৃহে শিশুদের অ্যানিমেশন ছবি দেখানো হয়। আজ সোমবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, আগামী মার্চ মাসে সৌদি আরবে প্রথম স্থায়ী প্রেক্ষাগৃহ উদ্বোধন করা হবে। ছবি প্রদর্শন ছাড়াও বেশ কিছু ক্ষেত্রে দেশটিতে সংস্কারমূলক কিছু কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এরই মধ্যে ঘরোয়া কনসার্ট, ফুটবল মাঠে নারীর উপস্থিতি, কৌতুক অনুষ্ঠান ও নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে কর্তৃপক্ষ অস্থায়ী স্থাপনায় চলচ্চিত্র প্রদর্শন করছে। সৌদির জেদ্দা শহরে একটি সাংস্কৃতিক হলে প্রজেক্টর ও লালগালিচা বসিয়ে প্রেক্ষাগৃহ তৈরি করা হয়েছে।
সপ্তাহব্যাপী এ ছবির প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে ‘সিনেমা ৭০’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানের প্রধান মামদৌহ সেলিম রয়টার্সকে বলেন, ‘যেহেতু এখন পর্যন্ত প্রেক্ষাগৃহের কোনো অবকাঠামো নেই। ফলে ছবি প্রদর্শনের জন্য আমরা বিকল্প ব্যবস্থা করেছি।’ তিনি আরও বলেন, ১১ ডিসেম্বর চলচ্চিত্র প্রদর্শনে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর এ প্রদর্শনীর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
৮০-র দশকে ইসলামি চিন্তাবিদদের চাপের মুখে সৌদি আরবে চলচ্চিত্র প্রদর্শনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। ৩২ বছরের যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বে দেশটিতে অনেক সংস্কারমূলক কাজ চলছে। সেটির ধারাবাহিকতায় ছবি দেখানোর ব্যবস্থা করা হলো।
আরও মজা
নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় গতকাল রোববার স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে প্রথমবার অ্যানিমেশন ছবি দেখেছেন ২৮ বছর বয়সী সুলতান আল-ওতাইবি। ছবি দেখার পর তিনি বলেন, ‘এ সময় বাসায় না থেকে থিয়েটারে ছবি দেখতে পেয়ে আমরা খুশি। সপ্তাহান্তে এমন ব্যবস্থা আমাদের জন্য অনেক স্বস্তির। এতে মনে হতে পারে অনেক দেরিতে কিছু কাজ ঘটতে যাচ্ছে, কিন্তু খোদাকে ধন্যবাদ যে এগুলো শুরু হচ্ছে।’
তবে অনেকে সব ধরনের সিনেমা দেখতে চান।
প্রতিবছর হাজার হাজার সৌদি নাগরিক বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যর অন্য দেশগুলো আনন্দের জন্য ভ্রমণে যান। বাইরে গিয়ে দেশের অর্থ ব্যয় বন্ধেই এমন সব উদ্যোগ নিচ্ছে সৌদি সরকার।
২০৩০ সালের মধ্য দেশে ৩০০ সিনেমা হল তৈরি করতে চায় দেশটির সরকার। এসব সিনেমা হলে ২ হাজার স্ক্রিন বসানো হবে। এতে ২ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের (৯০ বিলিয়ন রিয়াল) ব্যবসার সঙ্গে সঙ্গে ৩০ হাজার লোকের স্থায়ী চাকরির ব্যবস্থা হবে।