জাপানে বিদেশিদের প্রবেশ বন্ধ

করোনাভাইরাস
প্রতীকী ছবি

জাপানে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে চলায় প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ হিসেবে সরকার আরও সাতটি জেলায় জরুরি অবস্থা সম্প্রসারিত করার ঘোষণা দিয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা আজ বুধবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দিয়েছেন। বিদেশিদের জাপান প্রবেশের ওপরও নতুন কড়াকড়ি জাপান সরকার আরোপ করেছে। আজ থেকে কোনো বিদেশি নাগরিককেই জাপানে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না।

এর আগে চলতি মাসের সাত তারিখে সরকার টোকিও ও পার্শ্ববর্তী তিনটি জেলায় দ্বিতীয় দফায় সীমিত আকারে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিল। সুগা তখন বলেছিলেন, তিনি মনে করেন না ওসাকা, কিওতো ও কোবের মতো জনবহুল শহর থাকা জাপানের পশ্চিমাঞ্চলে জরুরি অবস্থা জারির কোনো প্রয়োজন আছে। তবে গত এক সপ্তাহে দেশজুড়ে করোনা পরিস্থিতির অবনতি অব্যাহত থাকা অবস্থায় আগের সেই অবস্থান থেকে এখন তাঁকে সরে আসতে হয়েছে। জাপানের মোট সংক্রমণের হিসাব এখন ৩ লাখ ছাড়িয়ে গেছে।

জরুরি অবস্থার আওতায় আসা জেলা সাতটি হচ্ছে কানসাই অঞ্চলের ওসাকা, কিওতো ও হিওগো; তোকাই অঞ্চলের আইচি ও গিফু, টোকিওর উত্তর-পূর্বাঞ্চলের তোচিগি এবং কিউশু দ্বীপের ফুকুওকা। ফলে উত্তরের হোক্কাইডো ও সর্বদক্ষিণের ওকিনাওয়া ছাড়া দেশের অন্য সব কটি এলাকাই এখন কার্যত জরুরি অবস্থার আওতায় আসছে। সেই সাত জেলায় রেস্তোরাঁ ও পানশালা রাত আটটার মধ্যে বন্ধ করে দিতে বলা হবে এবং ৭০ শতাংশের বেশি কর্মী যেন একই সময়ে অফিসে উপস্থিত না থাকেন, সে জন্য তাঁদের বাড়িতে থাকা অবস্থায় কাজ সেরে নেওয়া কিংবা পালাক্রমে পরিবহনব্যবস্থায় যাতায়াতের সুযোগ করে দিতে বিভিন্ন কোম্পানিকে বলা হবে।

বিদেশিদের প্রবেশ নিষেধাজ্ঞায় এর আগে তাইওয়ান এবং যে ১১টি দেশ আওতামুক্ত ছিল, সেসব দেশও এখন নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়ছে। পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত এই আদেশ বহাল থাকবে। ফলে জাপান এখন বিশ্বের সঙ্গে প্রকৃত যোগাযোগ থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে।

এতটা কড়াকড়ি আরোপের পেছনে অলিম্পিক আয়োজনের ভাবনা প্রধানমন্ত্রীর মনে কাজ করলেও সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, জাপানে প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ চাইছেন না অলিম্পিক যেন পুনর্নির্ধারিত সময়ে, অর্থাৎ এ বছরের জুলাই-আগস্ট মাসে অনুষ্ঠিত হয়। তাঁরা মনে করছেন, সেই সময়ের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে না। আর তা সম্ভব হলেও অনেকের আশঙ্কা যে অলিম্পিক উপলক্ষে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ভ্রমণকারীরা জাপানে আসতে শুরু করলে করোনাভাইরাস আরও ভয়াবহ আকারে ফিরে আসতে পারে। ফলে তাঁরা চাইছেন না জাপান যেন কোনো ঝুঁকির দিকে পা বাড়ায়।