জাপানে শিশুদের আত্মহত্যা বেড়েছে

জরুরি অবস্থার মধ্যে কিউটোর ফাঁকা রাস্তা। ১৩ জানুয়ারি
ছবি: রয়টার্স

জাপানে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলার সময় আত্মহত্যার হার বেড়েছে। বিশেষ করে নারী ও শিশুদের মধ্যে। গত জুলাই থেকে অক্টোবরের মধ্যে এ হার আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৬ শতাংশ বেড়েছে বলে এক গবেষণায় বলা হয়। অথচ করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময় এ হার আগের চেয়ে ১৪ শতাংশ কমে গিয়েছিল।

হংকং ইউনিভার্সিটি ও টোকিও মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউট অব জেরনটলজি এ গবেষণা চালায়।

‘নেচার হিউম্যান বিহেবিয়র’ জার্নালে গতকাল শুক্রবার প্রকাশিত এই গবেষণা প্রতিবেদনে গবেষক বলেন, সাধারণ সময়ের অর্থনৈতিক অবস্থার চেয়ে এই মহামারির সময় শিশু-কিশোর ও নারীদের (বিশেষ করে গৃহিণী) মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

করোনার প্রথম তরঙ্গের সময় আত্মহত্যার হার কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে সরকারের ভর্তুকি প্রদান, কর্মঘণ্টা কমিয়ে দেওয়া ও স্কুল বন্ধ রাখাকে কারণ হিসেবে দেখছেন গবেষকেরা।

কিন্তু এই কমার হার করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গে পুরোই উল্টোচিত্র ধারণ করেছে। নারীদের মধ্যে আত্মহত্যার পরিমাণ ৩৭ শতাংশ বেড়েছে, যা পুরুষের তুলনায় পাঁচ গুণ। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, দীর্ঘ এই মহামারির কারণে শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষতির মুখে। আর এর প্রধান শিকার নারীরা। তাই কর্মজীবী মায়েদের ওপর এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে। এমনকি পারিবারিক নির্যাতনও বেড়েছে।

গবেষকেরা তাঁদের গবেষণাকাজে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে ২০১৬ সালের নভেম্বর থেকে ২০২০ সালের অক্টোবর পর্যন্ত নেওয়া তথ্য ব্যবহার করেছেন। সেখানে তাঁরা দেখেছেন, করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গের সময় শিশুদের মধ্যে আত্মহত্যার এ হার ৪৯ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা এ মাসে টোকিও এবং এর আশপাশের তিনটি প্রিফেকচারে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন। পরে ওসাকা, কিউটোসহ আরও ৯টি প্রিফেকচারকেও এ জরুরি অবস্থার আওতায় আনা হয়।

প্রশাসনিক ও নিয়ন্ত্রণমূলক সংস্কারবিষয়ক মন্ত্রী তারো কোনো রয়টার্সকে বলেন, লোকজন কোভিড-১৯ নিয়ে উদ্বিগ্ন। কিন্তু অনেক মানুষ তাঁদের কাজ হারিয়ে, আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কোনো আশা দেখছেন না, তাঁরা আত্মহত্যা করছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের করোনার নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা ও অর্থনীতির মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে।’