জাহাজের ক্যাপ্টেনসহ ১৬ জনকে হত্যা করে পলায়ন

উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যের সামরিকমুক্ত জোন পানমুনজম। ছবি: এএফপি
উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যের সামরিকমুক্ত জোন পানমুনজম। ছবি: এএফপি

উত্তর কোরিয়া ত্যাগী দুই জেলের বিরুদ্ধে জাহাজের ক্যাপ্টেনসহ ১৬ জন ক্রুকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। পরে ওই দুই জেলে দক্ষিণ কোরিয়ায় আশ্রয় নেওয়ার উদ্দেশ্যে পালাচ্ছিলেন। গত শনিবার তাঁরা মাছ ধরার নৌকা নিয়ে দুই দিনের চেষ্টায় উপকূলবর্তী সীমানা পার হওয়ার পর দক্ষিণ কোরিয়ার নৌবাহিনী তাঁদের আটক করে। পরে তাঁদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়।

দক্ষিণ কোরিয়া সাধারণত দেশত্যাগীদের আশ্রয় আবেদন মঞ্জুর করে। তবে এ ক্ষেত্রে ওই দুজনকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি উল্লেখ করে তাঁদের উত্তর কোরিয়ায় ফেরত পাঠানো হয়। তাঁদের দেশত্যাগী হিসেবে গ্রহণ না করে অপরাধী বিবেচনায় ফেরত পাঠানো হয়েছে।

ইয়নহাপ বার্তা সংস্থার বরাত দিয়ে আজ শুক্রবার বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়, ওই দুজন হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁরা জানান, জাহাজের ক্যাপ্টেন তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতেন বলে তাঁরা দুজন আরেকজনকে সঙ্গে নিয়ে গত মাসের শেষ দিকে জাহাজের ক্যাপ্টেনকে হত্যা করেন। পরে জাহাজের যেসব ক্রু তাঁদের বাধা দিতে আসেন, একে একে তাঁদের হত্যা করা হয়।

প্রথমে সন্দেহভাজন তিনজন উত্তর কোরিয়ার দিকে ফেরত আসছিলেন। তবে একজনকে বন্দরে স্থানীয় পুলিশ আটক করলে তাঁরা দুজন নৌকায় করে দক্ষিণ কোরিয়ার দিকে পালানোর সিদ্ধান্ত নেন।

২০-২২ বছর বয়সী আটক দুজনকে দুই দেশের সেনামুক্ত এলাকা পানমুনজম দিয়ে ফেরত পাঠানো হয়। পানমুনজম দিয়ে উত্তর কোরিয়ায় কাউকে এই প্রথমবার ফেরত পাঠাল দক্ষিণ কোরিয়া। দুই দেশের মধ্যে বন্দী বিনিময়ের কোনো চুক্তি নেই।

কোরীয় উপদ্বীপে দেশত্যাগীরা সাধারণত উত্তর কোরিয়ারই হয়ে থাকেন। তাঁরা স্বৈরতান্ত্রিক দেশ ছেড়ে গণতান্ত্রিক ও তুলনামূলকভাবে সমৃদ্ধ দক্ষিণ কোরিয়ায় পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কখনো কখনো এ ধরনের দেশত্যাগ বিপজ্জনকও। কোনো কোনো সময় সেনারা হেঁটে সীমান্ত অতিক্রম করে, তাঁদের সঙ্গে বুলেটও থাকে।
দক্ষিণ কোরিয়া জানিয়েছে, ২০১৭ সালে উত্তর কোরিয়া থেকে তাদের দেশে এমন ১ হাজার ১২৭টি দেশত্যাগের ঘটনা ঘটেছিল।
দেশত্যাগীদের সাধারণত দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষ জিজ্ঞাসাবাদ করে থাকে। সমাজে মুক্ত করে দেওয়ার আগে দীক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যে সরকার পরিচালিত কেন্দ্রে তাঁদের রাখা হয়।