জ্বালানি তেল না পেয়ে আগুন

সম্প্রতি শ্রীলঙ্কায় বিক্ষোভের সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার বাড়িতে আগুন দেন বিক্ষোভকারীরা।
ছবি: রয়টার্স

শ্রীলঙ্কায় জ্বালানি তেলের সংকটে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠছেন অনেকেই। অনেকেই বিক্ষোভ করতে রাস্তায় নামছেন। এমনই এক ক্ষিপ্ত ব্যক্তি এক তেলপাম্পের মালিকের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছেন। দেশটির উত্তর–মধ্য প্রদেশের অনুরাধাপুরা বিভাগের ইপালোগামা জেলার আইওসি ফিলিং স্টেশনের মালিকের সঙ্গে এ ঘটনা ঘটেছে। খবর শ্রীলঙ্কার ডেইলি মিররের।

পুলিশ বলছে, গত শনিবার ওই তেলপাম্পের সামনে অনেকেই জড়ো হন। কিন্তু একপর্যায়ে তেল ফুরিয়ে গেলে ক্ষিপ্ত হন এক ব্যক্তি। পরে রাতে বিদ্যুৎ না থাকা অবস্থায় ওই তেলপাম্পের মালিকের দোতলা বাড়িতে আগুন দেন তিনি। ওই সময় তেলপাম্পের মালিকের স্ত্রী ও দুই সন্তান সেখানেই ছিল। পরে আশপাশের লোকজন ও পুলিশ গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ও তাঁদের উদ্ধার করে। পুলিশ বলছে, তারা পুরো ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছে।

এদিকে বার্তা সংস্থা সিনহুয়া বলছে, বেশি দামে বিক্রির জন্য যাঁরা ডিজেল ও পেট্রল কিনে মজুত করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে একটি অভিযান শুরু করেছে শ্রীলঙ্কার পুলিশ। রাজধানী কলম্বোয় পুলিশের একজন মুখপাত্র বলেছেন, গতকাল রোববার থেকে জ্বালানি তেল মজুতকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ দেশজুড়ে পুলিশের এ অভিযান শুরু হয়েছে।

পুলিশের মুখপাত্র নিহাল থালদুয়া আরও বলেন, তাঁদের কাছে তথ্য আছে, বেশি দামে বিক্রির জন্য জ্বালানি কিনতে অনেকে গ্যাস স্টেশনগুলোতে ভিড় করছেন। গ্যাস স্টেশনগুলোতে জ্বালানি থাকা সত্ত্বেও মজুতকারী ক্রেতাদের জন্য দীর্ঘ লাইন লেগে যাওয়ায় সাধারণ ক্রেতাদের অসুবিধা হচ্ছে বলে জানান নিহাল থালদুয়া।

এদিকে শ্রীলঙ্কার বিদ্যুৎ ও জ্বালানিবিষয়ক মন্ত্রী কাঞ্চনা উইজেসেকেরা জানান, শনিবার রাতে পেট্রলবাহী একটি জাহাজ কলম্বোয় তেল নামানো শুরু করেছে। পেট্রলবাহী আরও একটি জাহাজ ২৫ মে কলম্বো বন্দরে এসে পৌঁছাবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। ভারত শনিবার দ্বীপদেশটিকে ঋণ হিসেবে শ্রীলঙ্কাকে আরও ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল সরবরাহ করেছে।

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ–সংকটে কয়েক মাস ধরে শ্রীলঙ্কায় ব্যাপক জ্বালানি–সংকট চলছে। এর প্রতিবাদে দেশটির মানুষ সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু করেছেন। দেশটিতে খাদ্য, ওষুধ, জ্বালানি, বিদ্যুৎ–সংকট ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। পরিস্থিতি সামলাতে পারছে না সরকার। সংকটের জন্য ক্ষমতাসীন রাজাপক্ষে পরিবারকে দায়ী করে গণবিক্ষোভ করছেন দেশটির মানুষ। প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের পদত্যাগের পর প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের পদত্যাগ দাবি করছেন তাঁরা।

এ পরিস্থিতিতে আশার কথা শোনাতে পারছেন না নতুন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে। তিনি এই সপ্তাহে ঘোষণা করেছেন, শ্রীলঙ্কা মারাত্মক খাদ্যসংকটের সম্মুখীন হতে পারে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় চাষাবাদের জন্য অব্যবহৃত রাষ্ট্রীয় জমি ব্যবহারের কথা বলছেন তিনি।