ট্যাংকার জব্দের আগে ব্রিটিশ রণতরির সঙ্গে ইরানের কথোপকথন

জব্দ করা ব্রিটিশ পতাকাবাহী ট্যাংকার দ্য স্টেনা ইমপেরো। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া
জব্দ করা ব্রিটিশ পতাকাবাহী ট্যাংকার দ্য স্টেনা ইমপেরো। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

উপসাগরীয় অঞ্চলে হরমুজ প্রণালিতে ব্রিটিশ পতাকাবাহী ট্যাংকার স্টেনা ইমপেরো জব্দ করা নিয়ে ইরানের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। ট্যাংকারটি জব্দ করার আগে বিশেষ রাজকীয় রণতরি এইচএমএস মনট্রোসের সঙ্গে রেডিও কথোপকথনে স্টেনা ইমপেরোকে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে পরিদর্শন করতে চেয়েছিল ইরান। ওই সময়ে ইরানের সশস্ত্র নৌযানের সঙ্গে এইচএমএস মনট্রোসের রেডিওর মাধ্যমে চলা কথোপকথন প্রকাশিত হয়েছে।

আজ রোববার বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়, ব্রিটিশ উপকূলবর্তী নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ড্রাইয়াড গ্লোবালের কাছে রেডিও কথোপকথনের রেকর্ডটি আছে। রেডিও রেকর্ডিং থেকে শোনা যায়, যেটিকে ইরানের নৌযান ভাবা হচ্ছে, সেটি একটি জাহাজকে (মনে করা হচ্ছে স্টেনা ইমপেরো) গতিপথ পরিবর্তন করতে বলছে। রেডিওতে বলা হয়, ‘আপনারা যদি আইন মেনে চলেন, তাহলে নিরাপদ থাকবেন।’

রেকর্ডিংয়ে নিজেদের চিহ্নিত করেছে এইএমএস মনট্রোস। এটি ব্রিটিশ উপকূলবর্তী নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ড্রাইয়াড গ্লোবালের অধীন রণতরী। এটি স্টেনা ইমপেরোকে বলে, ‘যেহেতু আপনারা চিহ্নিত আন্তর্জাতিক প্রণালিতে রুট পরিচালনা করছেন, আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে আপনাদের পথ ক্ষতিগ্রস্ত, বাধাগ্রস্ত, প্রতিহত বা ব্যাহত হবে না।’

হরমুজ প্রণালি দিয়ে যাওয়ার সময় গত শুক্রবার ব্রিটিশ পতাকাবাহী ট্যাংকার স্টেনা ইমপেরোকে জব্দ করে ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড। পরে ট্যাংকারটি জব্দ করার সময়ের ভিডিও প্রকাশ করে ইরান।

যুক্তরাজ্য ট্যাংকার জব্দকে ‘অবৈধ’ উল্লেখ করে ইরানকে তা ছেড়ে দিতে বলেছে। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট বলেছেন, এই ঘটনা (ট্যাংকার জব্দ) হরমুজ প্রণালিতে যুক্তরাজ্য ও আন্তর্জাতিক নৌচলাচলে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে গুরুতর প্রশ্নের উদ্রেক করেছে।

ইরানের অভিযোগ, দ্য স্টেনা ইমপেরো আন্তর্জাতিক সমুদ্রযাত্রাসংক্রান্ত আইন লঙ্ঘন করেছিল। ট্যাংকারটি তিনটি নিয়ম ভেঙেছিল। ট্যাংকারটি জিপিএস বন্ধ করে রেখেছিল। প্রবেশমুখের দিকে না গিয়ে হরমুজ প্রণালির দিকে যাচ্ছিল। সতর্কবার্তা অমান্য করছিল। এ কারণেই ট্যাংকারটিকে জব্দ করা হয়।

ট্যাংকারটির পরিচালনা প্রতিষ্ঠান স্টেনা বাল্ক বলেছে, ট্যাংকারটির আন্তর্জাতিক জলসীমা দিয়ে সব নিয়মকানুন মেনেই যাচ্ছিল।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেছেন, ট্যাংকারটি ওমান জলসীমায় ছিল। পরে ট্যাংকারটি ইরানের জলসীমার দিকে যেতে বাধ্য করা হয়। তাই ট্যাংকারটিকে জব্দ করা আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

৪ জুলাই সিরিয়াগামী অপরিশোধিত তেলবাহী একটি ইরানি ট্যাংকারকে জিব্রালটারের জলসীমা থেকে জব্দ করে ব্রিটেনের রাজকীয় নৌবাহিনী। এ নিয়ে ইরান ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। ট্যাংকারটি ছেড়ে না দিলে পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল তেহরান।