তাইওয়ানকে চীনের হুমকি, ‘স্বাধীনতা মানে যুদ্ধ’

গত সেপ্টেম্বরে তাইওয়ানের আকাশে চীনের অ্যান্টিসাবমেরিন সামরিক বিমান
রয়টার্স ফাইল ছবি।

তাইওয়ান সীমান্তে চীনের সাম্প্রতিক সামরিক উপস্থিতির মধ্যেই দেশটিকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে চীন। বলেছে, ‘স্বাধীনতা মানে যুদ্ধ’। তবে তাইওয়ান এ হুমকির নিন্দা জানিয়েছে। পাশাপাশি নিজেদের স্বাধীনতা রক্ষার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

চীন মনে করে, তাইওয়ান তাদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া একটি প্রদেশ। তাইওয়ান কোনো সময় স্বাধীনতা ঘোষণা করলে চীনের পক্ষ থেকে শক্তিপ্রয়োগের সম্ভাবনার বিষয়টি কখনোই নাকচ করেনি বেইজিং। ১৯৪৯ সাল থেকে চীন ও তাইওয়ান পৃথকভাবে শাসিত হচ্ছে।

আমরা তাইওয়ানের স্বাধীনতাকামীদের সতর্ক করতে চাই। যাঁরা আগুন নিয়ে খেলছেন, আগুন তাঁদের পুড়িয়ে দেবে। তাইওয়ানের স্বাধীনতা মানেই হচ্ছে যুদ্ধ।
চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র উ কিয়ান

তাইওয়ানের দাবি, গত সপ্তাহের শেষের দিকে চীনের কয়েকটি যুদ্ধ ও বোমারু বিমান দেশটির দক্ষিণ–পশ্চিমাঞ্চলের আকাশ প্রতিরক্ষা জোনে ঢুকে পড়ে। এরপর বেইজিংকে তাইওয়ানের ওপর চাপ বন্ধ করতে আহ্বান জানায় যুক্তরাষ্ট্র।

চীন মনে করে তাইওয়ানের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছে। যদিও তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন বারবার বলছেন যে তাইওয়ান ইতিমধ্যে একটি ‘স্বাধীন দেশ’ এবং এর আনুষ্ঠানিক নাম ‘দ্য রিপাবলিক অব চায়না’।

তাইওয়ানের সীমানার কাছে চীনের বিমানবাহিনীর সাম্প্রতিক মহড়া প্রসঙ্গে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র উ কিয়ান এক মাসিক সংবাদ বিফ্রিংয়ে বলেছেন, তাইওয়ান হচ্ছে চীনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তিনি আরও বলেছেন, তাইওয়ান প্রণালিতে বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও চীনের জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি বলেই সেখানে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির এসব কর্মকাণ্ড।

মুষ্টিমেয় কিছু লোক তাইওয়ানের স্বাধীনতা দাবি করছে উল্লেখ করে উ বলেন, ‘তাইওয়ান ইনডিপেনডেন্স’ বাহিনীর উসকানি ও বিদেশি হস্তক্ষেপের পরিপ্রেক্ষিতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা তাইওয়ানের স্বাধীনতাকামীদের সতর্ক করতে চাই। যাঁরা আগুন নিয়ে খেলছেন, আগুন তাঁদের পুড়িয়ে দেবে। তাইওয়ানের স্বাধীনতা মানেই হচ্ছে যুদ্ধ।’

তাইওয়ানের মেইনল্যান্ড অ্যাফেয়ার্স কাউন্সিল বলেছে, চীনের চিন্তাভাবনা করে কথা বলা উচিত। এই দ্বীপ রাষ্ট্রটির সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখার সংকল্পকে ছোট করে দেখা ঠিক হবে না।

তাইওয়ান চীনের এ হুমকির নিন্দা জানিয়েছে। তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং রাষ্ট্রটির স্বাধীনতা রক্ষা ও দমন–নিপীড়নের শিকার না হওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

আরও পড়ুন