তালেবানকে বয়কটের পরিণামে বিভেদ-বিভক্তি বাড়বে: কাতারের আমির

২১ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেন কাতারের আমির তামিম বিন হামাদ আল থানি
ছবি: এএফপি

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে দাঁড়িয়ে আফগানিস্তানের পক্ষে জোরালো বক্তব্য দিয়েছেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, তালেবানকে বয়কট করার পরিণামে বিভেদ-বিভক্তি বাড়বে।

২১ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেন কাতারের আমির। সেখানে তিনি বলেন, রাজনীতিকে পাশে রেখে আফগানিস্তানকে সাহায্য করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে।

আফগানিস্তানের পাশে কাতারের থাকার প্রত্যয় আবার ব্যক্ত করেছেন তামিম বিন হামাদ। তিনি বলেন, দোহায় অনুষ্ঠিত সমঝোতার ইতিবাচক ফলাফল দেখার জন্য যা যা করার প্রয়োজন, তার সবকিছু কাতার করে যাবে। এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত সব পক্ষ সমঝোতার শর্ত মেনে চলবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

আফগানিস্তানের জনগণের মানবিক প্রয়োজন পূরণের পাশাপাশি মানবাধিকার রক্ষা, জঙ্গিবাদ দমন ও রাজনৈতিক সমাধানের মাধ্যমে দেশটিতে শান্তি-স্থিতিশীলতা আনার পক্ষে কাতারের দৃঢ় অবস্থানের কথা জাতিসংঘে দেওয়া বক্তৃতায় তুলে ধরেন তামিম বিন হামাদ।

কাতারের আমির বলেন, ২০ বছরের চেষ্টা ও বিপুল অর্থ ব্যয়ের পরও আফগানিস্তানে বিপর্যয় ঘটেছে। দেশটিতে কোনো রাজনৈতিক কাঠামো দাঁড় করানো যায়নি। তাই এখন তালেবানদের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রাখাকে তিনি গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন।

তামিম বিন হামাদ আরও বলেন, তালেবানকে বয়কট করার পরিণামে বিভেদ-বিভক্তি বাড়বে। কেবল আলোচনাই ইতিবাচক ফলাফল দিতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

কাতারের আমির তাঁর বক্তৃতায় সিরিয়া ও লিবিয়া প্রসঙ্গও তোলেন। তিনি বলেন, সিরিয়ায় বিস্তার ঘটা জঙ্গিবাদ মধ্যপ্রাচ্যসহ সারা বিশ্বকে হুমকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। সিরিয়ার জনগণের দুর্দশাকে অবজ্ঞা না করার জন্য তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।

আফগানিস্তানে সম্প্রতি গঠিত তালেবান সরকার এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্বীকৃতি পায়নি। তারা এখনো আফগানিস্তানের সর্বত্র নিয়ন্ত্রণ পাকাপোক্ত করার কাজ করছে। তবে তালেবান সরকারের জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়া জরুরি হয়ে উঠেছে।

আফগানিস্তান সরকার গঠনের আগে বলেছিল, তারা আফগানিস্তানে মানবাধিকার নিশ্চিত করবে, নারীদের অধিকার নিশ্চিত করবে। কিন্তু তালেবানের কথার সঙ্গে কাজের এখন পর্যন্ত কোনো মিল পাওয়া যাচ্ছে না।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন আগেই বলেছেন, তালেবান কী বলছে, সেটি মুখ্য নয়। তালেবান কী করছে, তার ওপরই তাদের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি নির্ভর করবে।