থাইল্যান্ডে বিক্ষোভ দমাতে ইন্টারনেটে কোপ

সন্ধ্যা ৬টায় ব্যাংককে সব গণপরিবহন স্টেশনে জাতীয় সংগীত বাজানো হয়। আজ এ সময় বিক্ষোভকারীরা তিন আঙুল তুলে স্যালুট জানায়ছবি: রয়টার্স

থাইল্যান্ডে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ দমাতে এবার ইন্টারনেটের ওপর হস্তক্ষেপের পথে হাঁটছে দেশটির সরকার। এরই মধ্যে ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে বার্তা আদান–প্রদানের অ্যাপ টেলিগ্রাম বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। সরকারের এ–সংক্রান্ত একটি ‘অত্যন্ত গোপনীয়’ নথি ফাঁস হয়েছে, যা দেশটির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। বিবিসি খবরে এসব তথ্য জানানো হয়।

এদিকে গত সপ্তাহে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পরও বিক্ষোভের সংবাদ পরিবেশন করায় চারটি সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে থাইল্যান্ডে। সরকারি নির্দেশ অমান্য করায় ওই সংবাদমাধ্যমগুলোকে বন্ধ করে দেওয়ারও হুমকি দিয়েছে পুলিশ।

ব্যাংককে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ। ১৮ অক্টোবর
ছবি: রয়টার্স

রাজতন্ত্রের ক্ষমতা খর্ব ও প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরে থাইল্যান্ডে বিক্ষোভ চলছে। মূলত শিক্ষার্থীরাই এসব বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বিক্ষোভ দমনে গত বৃহস্পতিবার জরুরি অবস্থা জারি করে দেশটির সরকার। গ্রেপ্তার করা হয় অন্তত ৮০ জনকে। রাজতন্ত্রের আইন লঙ্ঘনের বিষয়টি প্রমাণিত হলে তাঁদের লম্বা সময় কারাভোগ করতে হতে পারে। থাইল্যান্ডের আইন অনুযায়ী, রাজপরিবারকে অবমাননা করলে ১৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

গতকাল সোমবার স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো সরকারের এ পরিকল্পনার বিষয়টি জানিয়ে খবর প্রকাশ করে। টেলিগ্রাম অ্যাপটি বিক্ষোভকারীদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। এটি ব্যবহার করে খুব অল্প সময়ের মধ্যে বার্তা আদান–প্রদান ও বিক্ষোভের আয়োজন করছেন তাঁরা।

সরকারের ফাঁস হওয়া নথিটি থাইল্যান্ডের ডিজিটাল ইকোনমি অ্যান্ড সোসাইটি মন্ত্রণালয় তৈরি করেছিল। দেশটিতে ইন্টারনেটের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা রয়েছে মন্ত্রণালয়টির। মন্ত্রণালয় থেকে নথিটি থাইল্যান্ডের ন্যাশনাল ব্রডকাস্টিং অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশনস কমিশনে পাঠিয়েছিল। সেখানে বলা হয়, ‘টেলিগ্রাম অ্যাপ বন্ধ করার ব্যাপারে দেশের সব ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ও মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানকে অবহিত করতে আপনাদের (ন্যাশনাল ব্রডকাস্টিং অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশনস) সহযোগিতা চাইছি।’

এদিকে পুলিশও সাংবাদিকদের বলেছে, তারাই ডিজিটাল মন্ত্রণালয়কে টেলিগ্রামে ফ্রি ইয়ুথ গ্রুপটিকে বন্ধ করে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। এই গ্রুপের সদস্যরাই মূলত দেশটিতে কয়েক মাস ধরে চলা বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

আরও পড়ুন