থাইল্যান্ডে ১০ হাজার গণতন্ত্রপন্থীর বিক্ষোভ

থাইল্যান্ডে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছে না তরুণেরা
ছবি : রয়টার্স

থাইল্যান্ডে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চলছে। গত মঙ্গলবার দেশটিতে এ বিক্ষোভ সহিংস রূপ নেয়। এতে ছয়জন গুলিবিদ্ধ ও বেশ কয়েকজন আহত হন। ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল বুধবার দেশটিতে কমপক্ষে ১০ হাজার গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভকারী পুলিশের প্রধান কার্যালয় অভিমুখে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এ সময় তাঁরা রং ও পানি পিস্তল ব্যবহার করেন। যুক্তরাজ্যের ‘দ্য গার্ডিয়ান’-এর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিক্ষোভকারী নেতারা তাঁদের দিকে জলকামান ব্যবহার করে রাসায়নিকযুক্ত পানি ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ার নিন্দা জানান। তাঁরা এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ‘স্বৈরাচারের দাশ’, ‘আমাদের কর’ প্রভৃতি স্লোগান দেন। পুলিশের আঙিনায় রং ছিটিয়ে দেন। এ সময় বিক্ষাভকারীরা খেলনা পানি পিস্তল ব্যবহার করে পুলিশের প্রতিক্রিয়ার জবাব দেন।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, মঙ্গলবার দেশটির পার্লামেন্ট ভবনের পাশে সরকারবিরোধী ও রাজতন্ত্রের অনুসারী দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ব্যবহার করে। এ সময় নদীর পাশে অবস্থিত পার্লামেন্ট ভবন থেকে এমপিরা নৌকায় স্থান ত্যাগ করেন। গত জুলাই থেকে তরুণদের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা আন্দোলনে সেদিন সবচেয়ে সহিংস সংঘর্ষ দেখা যায়। বিক্ষোভ প্রদর্শনের সময় ৫৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ব্যাংককের একটি জরুরি সেবাকেন্দ্র। রাতের দিকে ওই এলাকায় গুলির শব্দও শোনা যায়।

মঙ্গলবারের সহিংসতা সত্ত্বেও বুধবার ব্যাংককের র‍্যাচাপ্রাসংয়ে ১০ হাজারের বেশি মানুষ জড়ো হন। সেখানে বিক্ষোভকারীরা তাঁদের আন্দোলন বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

বিক্ষোভে খেলনা পিস্তল ধরে রাখা থানিসর্ন (২২) বলেন, ‘আমাদের অস্ত্র নেই, আমাদের সেনাবাহিনী নেই। আমার মনে হয়েছে, বাইরে এসে তাদের জানিয়ে দিই যে, ভয় পাই না। আমরা তাদের চেয়ে শক্তিশালী।’

থানিসর্ন আরও বলেন, ‘মানুষ জেগে উঠেছে। এখন আর অপপ্রচার চালানোর যুগ নেই।’ মানুষ এখন পরিবর্তন চায় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

রাজতন্ত্রের ক্ষমতা খর্ব ও প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরে থাইল্যান্ডে বিক্ষোভ চলছে। থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী প্রাউত চান-ওচার পদত্যাগ চাইছেন বিরোধী দলের নেতারা। তাঁরা একই সঙ্গে রাজার ক্ষমতা খর্ব করার দাবিও জানাচ্ছেন। বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার জন্য অনেকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার বিক্ষোভকারীদের চাহিদা মোতাবেক সংবিধান সংশোধন করার জন্য বেশ কয়েকটি প্রস্তাব নিয়ে বিতর্ক করার কথা ভাবছিলেন আইনপ্রণেতারা।

সংবিধান পরিবর্তনের জন্য আইনপ্রণেতাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী মঙ্গলবার পার্লামেন্টের বাইরে জড়ো হন। কিন্তু সেখানে বিক্ষোভকারীদের কাঁটাতারের বেড়ায় আটকে রাখা হয়। পুলিশের একজন মুখপাত্র বলেছেন, সংরক্ষিত এলাকা ভাঙার চেষ্টা চালালে পুলিশ জলকামান ব্যবহারে বাধ্য হয়।