নেপালের প্রধানমন্ত্রী ওলিকে দল থেকে বহিষ্কার

কে পি শর্মা ওলি
ছবি: টুইটার

ক্ষমতাসীন নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি (এনসিপি) থেকে প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলিকে বহিষ্কার করেছে দলের আরেকটি পক্ষ। বার্তা সংস্থা এএনআই এই তথ্য জানিয়েছে।

নেপালে চলমান রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে গতকাল রোববার এনসিপি থেকে ওলিকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেয় দলে তাঁর বিরোধী পক্ষ।

বিরোধী পক্ষটির এক মুখপাত্র নারায়ণকাজি শ্রেষ্ঠা বলেন, ‘নেপালের প্রধানমন্ত্রী ওলি দলের আর সদস্য নন।’

নারায়ণকাজি শ্রেষ্ঠা বলেন, এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে ওলিকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দলে তাঁর সাধারণ সদস্যপদও নেই।

‘অসাংবিধানিক’ সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ওলিকে কেন দল থেকে বহিষ্কার করা হবে না, সে ব্যাপারে তাঁর কাছে জবাব চাওয়া হয়েছিল। এনসিপির পুষ্প কমল দহল ও মাধব কুমার নেপালের নেতৃত্বাধীন অংশ ওলিকে এই শোকজ করেছিল। তার ধারাবাহিকতায় ওলিকে দল থেকে বহিষ্কার করা হলো।

বিরোধী পক্ষের ভাষ্য, কারণ দর্শানোর চিঠিটি নেপালের প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি এই চিঠির কোনো জবাব দেননি।

নারায়ণকাজি শ্রেষ্ঠা বলেন, ‘আমরা অনেকটা সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিলাম। কিন্তু তিনি আমাদের চিঠির জবাব দেননি। তাই দলের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী ক্ষমতাবলে তাঁর বিষয়ে সবশেষ সিদ্ধান্তটি (বহিষ্কার) নেওয়া হয়।’

গত সপ্তাহে রাজধানী কাঠমাণ্ডুতে অনুষ্ঠিত দলের এক সমাবেশে দুই জ্যেষ্ঠ নেতা হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, ওলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাঁর দলীয় সদস্যপদ খারিজ করা হবে।

ওলি বর্তমানে নেপালের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন।

গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে প্রধানমন্ত্রী ওলির সুপারিশে প্রেসিডেন্ট বিদ্যাদেবী ভান্ডারি দেশটির পার্লামেন্ট ভেঙে দেন। একই সঙ্গে নেপালের প্রেসিডেন্ট ঘোষণা দেন, নির্ধারিত সময়ের প্রায় এক বছর আগে দেশটিতে আগামী ৩০ এপ্রিল ও ১০ মে দুই দফায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই ঘটনায় রাজনৈতিক সংকটে পড়ে নেপাল।

মূলত, এনসিপির মধ্যে বিরোধের জেরে পার্লামেন্ট ভেঙে আগাম নির্বাচন ঘোষণার পদক্ষেপটি আসে।

এনসিপি কার্যত দুটি ধারায় বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এক পক্ষে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ওলি। অন্য পক্ষে আছেন পুষ্প কমল দহল। ২০১৮ সালে ওলির সিপিএন-ইউএমএল ও দহলের সিপিএন-মাওবাদী একীভূত হয়ে গঠিত হয় এনসিপি।

নেপালে রাজনৈতিক সংকট মেটাতে দেশটিতে প্রতিনিধিদল পর্যন্ত পাঠায় চীন। কিন্তু দেশটির রাজনৈতিক সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে।