ফিলিপাইনে কোয়ারেন্টিন না মানায় শাস্তি, সইতে না পেরে মৃত্যু

করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সম্প্রতি ফিলিপাইনে লকডাউন আরোপ করা হয়েছে
ছবি: এএফপি।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে আরোপিত কোয়ারেন্টিনের বিধিনিষেধ ভাঙায় ফিলিপাইনে এক ব্যক্তিকে শাস্তি দিয়েছিল পুলিশ। আর সেই শাস্তির কারণেই এর পরদিন ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে।  

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়, গত বৃহস্পতিবার ড্যারেন মানায়োগ পেনারেদোন্দো নামের ক্যাভিটে প্রদেশের ওই বাসিন্দা পানি কিনতে বের হয়েছিলেন। প্রদেশটিতে বর্তমানে কঠোর লকডাউন বলবৎ আছে। এমন অবস্থায় ঘর থেকে বের হওয়ায় পুলিশ তাঁকে দৈহিক শাস্তি দেয় বলে পরিবারের অভিযোগ। আর শাস্তি পাওয়ার পরদিনই ড্যারেন বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং পরে তাঁর মৃত্যু হয়।

করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় লুজন দ্বীপের ক্যাভিটে প্রদেশে সম্প্রতি কড়া লকডাউন ও কারফিউ আরোপ করা হয়। ট্রিয়াস শহরের পুলিশপ্রধান মারলো সোলেরো বলেন, কারফিউর আইন ভঙ্গকারী কাউকে কোনো শারীরিক শাস্তি দেওয়া হয় না। পুলিশ কর্মকর্তারা দোষীদের মৌখিকভাবে শুধু সতর্ক করে দেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, কাউকে শারীরিক শাস্তি দেওয়া হয়েছে, এমন অভিযোগ কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে ড্যারেনের মৃত্যুর বিষয়টি জানান অ্যাড্রিয়ান লুজিনা। তিনি ড্যারেনের এক আত্মীয়। অ্যাড্রিয়ান বলেন, কারফিউ ভাঙায় ড্যারেনসহ আরও কয়েকজনকে ১০০ বার ওঠবস করার শাস্তি দেওয়া হয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেটি করতে ব্যর্থ হওয়ায় ফের তাঁদের ওঠবস করায় পুলিশ। শেষ পর্যন্ত ৩০০ বার ওঠবসের পর তাঁদের শাস্তি শেষ হয়।


গত শুক্রবার ভোর ছয়টায় ড্যারেনের ঘরে ফেরেন বলে তাঁর ভাই জানান। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম র‌্যাপলার জানিয়েছে, শুক্রবার পুরোটা দিন তাঁর চলাফেরা করতে অসুবিধা হয়। তিনি ব্যথায় কাতরাচ্ছিলেন। ড্যারেন হাঁটতেই পারছিলেন না, রীতিমতো হামাগুড়ি দিচ্ছিলেন। একপর্যায়ে তিনি নিশ্চল হয়ে পড়েন এবং তাঁর শ্বাসপ্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। পরে ড্যারেনের মৃত্যু হয়।


ট্রিয়াস শহরের মেয়র অনি ফেরের বলেন, এ ঘটনার তদন্তের জন্য পুলিশপ্রধানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওঠবস করার ওই শাস্তিকে তিনি ‘নির্যাতন’ বলে অভিহিত করেছেন।