ফিলিপাইনে মাদকবিরোধী অভিযানের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত আহ্বান

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) বিদায়ী প্রধান কৌঁসুলি ফাতু বেনসুদা
ফাইল ছবি: রয়টার্স

ফিলিপাইনের মাদক চোরাচালান ঠেকাতে প্রায় পাঁচ বছর আগে এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে। এ অভিযানে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে কি না, তা নিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রধান কৌঁসুলি ফাতু বেনসুদা।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ফিলিপাইনে মাদকের বিরুদ্ধে এ অভিযান পরিচালনা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছিলেন ফাতু বেনসুদা। ২০১৮ সালে এ তদন্ত শুরু করেন তিনি। ওই তদন্ত শুরুর পর আইসিসি থেকে বেরিয়ে যায় ফিলিপাইন।

ফাতু বেনসুদা আজ মঙ্গলবার প্রধান কৌঁসুলির পদ থেকে বিদায় নিচ্ছেন। তার এ পদে অধিষ্ঠিত হতে যাচ্ছেন ব্রিটিশ আইনজীবী করিম খান। আগামীকাল বুধবার তিনি এ দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।

আল–জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, বেনসুদা বিদায় নেওয়ার আগে গতকাল সোমবার একটি বিবৃতি দিয়েছেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, ফিলিপাইন সরকার ‘মাদকের বিরুদ্ধে যে যুদ্ধ’ শুরু করেছিল, তাতে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।

বেনসুদা বলেন, যে তথ্য পাওয়া গেছে, তাতে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে যখন অভিযান চালানো হয়েছে, তখন ফিলিপাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা অপরাধ করেছেন।

২০১৬ সালে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান শুরুর পর আন্তর্জাতিক মহলের সমালোচনার মুখে পড়েন দুতার্তে। এ অভিযানের নামে ভিন্নমত দমনের অভিযোগও ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, সরকারি হিসাব অনুসারে ওই অভিযানে কমপক্ষে ছয় হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলেছে, এ সংখ্যা আরও অনেক বেশি।

এদিকে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) দাবি, ২০১৬ সালে ৩০ জুন ক্ষমতা গ্রহণের পর মাদকবিরোধী অভিযানের ঘোষণা দেন দুতার্তে। এ অভিযানে ১২ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। তাদের অধিকাংশই শহুরে দরিদ্র মানুষ। এর মধ্যে ফিলিপাইন ন্যাশনাল পুলিশের হাতে মারা গেছে আড়াই হাজারের বেশি মানুষ।

এইচআরডব্লিউর গবেষকেরা বলেছেন, এসব হত্যাকে বৈধতা দেওয়ার জন্য ভুয়া নথিপত্র তৈরি করেছে পুলিশ। এরপর থেকেই আন্তর্জাতিক মহলে তদন্তের আহ্বান জানানো হচ্ছিল। কিন্তু এতে কখনোই পাত্তা দেননি দুতার্তে। সমালোচনার পরও অভিযান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।