ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকট সমাধানে নিরাপত্তা পরিষদে জরুরি বৈঠক

জাতিসংঘ
ফাইল ছবি

ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যকার চলমান সংঘর্ষ থামাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। যদিও ওই বৈঠকের পর কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি। কূটনীতিকেরা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ধারণা করছে, এই বৈঠক নিয়ে প্রকাশ্যে বিবৃতি দিলে তা হিতে বিপরীত হতে পারে।

তবে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে যে খসড়া বিবৃতি তৈরি করা হয়েছে, তা বার্তা সংস্থা এএফপির হাতে এসেছে। তা থেকে জানা গেছে, পূর্ব জেরুজালেম থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ ও ইসরায়েলের নতুন বসতি স্থাপন বন্ধের আহ্বান জানানো হবে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ থেকে। এ ছাড়া পশ্চিম তীরে উত্তেজনা বৃদ্ধি ও সংঘর্ষের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশের বিষয়টিও উল্লেখ রয়েছে বিবৃতিতে।

কূটনীতিকেরা বলেন, এই আলোচনার জন্য প্রথম খসড়া প্রস্তাব তৈরি করেছিল নরওয়ে। ওই প্রস্তাবের ওপর ভিত্তি করেই সিদ্ধান্ত হতে পারে। নরওয়ের এই খসড়া প্রস্তাবে সমর্থন দিয়েছে তিউনিসিয়া ও চীন।

ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে সংঘর্ষের শুরু চলতি সপ্তাহের শুরুতে। আল-আকসায় পবিত্র জুমাতুল বিদা আদায়কে কেন্দ্র এই সংঘর্ষের সূত্রপাত। বলা হচ্ছে, বিগত কয়েক বছরের মধ্যে ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে এটাই সবচেয়ে বড় সংঘর্ষের ঘটনা।

এ সংঘর্ষের পর ফিলিস্তিন রেড ক্রিসেন্ট আজ মঙ্গলবার বলেছে, ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে কমপক্ষে ৭০০ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। জেরুজালেম ও পশ্চিম তীরে এসব সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া ফিলিস্তিনের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গতকাল সোমবার গাজা উপত্যকায় বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। এই হামলায় কমপক্ষে ২০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন ৬৫ জন।

এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংগঠন উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এ ছাড়া সংঘর্ষ থামাতে দুই পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা।

এদিকে গতকালের বৈঠক নিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপির সঙ্গে কথা বলেছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের বেশ কয়েকজন কূটনীতিক। তাঁদের মধ্যে এক কূটনীতিকের মতে, যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, পরিস্থিতি শান্ত করতে এই বৈঠক ‘পর্দার পেছনে থেকে কাজ’ করার মতো। তবে এটা ঠিক নিশ্চিত নয়, এই সময় বিবৃতি কোনো কাজে আসবে কি না।

এ ছাড়া বেশ কয়েকজন কূটনীতিক জানিয়েছেন, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের পরিস্থিতি নিয়ে আরও আলোচনার পর একটি যৌথ বিবৃতি আসতে পারে সহিংসতা বন্ধের জন্য।
জাতিসংঘের মিশনে যুক্ত একজন কূটনীতিক বলেন, উত্তেজনা প্রশমনে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের যেকোনো পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র ওতপ্রোতভাবে কাজ করছে।

এ বৈঠকের আগে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সলিভেন ইসরায়েলের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। এই আলাপকালে ফিলিস্তিনিদের বসতি উচ্ছেদে ইসরায়েলের পদক্ষেপ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন সলিভেন।