ভারতীয় সেনাবাহিনীর অগ্নিপথ স্কিম: চাকরিতে বয়সের সীমা ২ বছর বাড়ল

ভারতের সেনাবাহিনীতে নিয়োগসংক্রান্ত ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্প নিয়ে সমালোচনা দেখা দিয়েছে
ফাইল ছবি: এএফপি

তুমুল বিক্ষোভ চলার মধ্যে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে ‘অগ্নিপথ’ স্কিমের আওতায় কর্মী নিয়োগের বয়সসীমা বাড়াল দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার চাকরিতে নিয়োগের সর্বোচ্চ সীমা ২১ বছর থেকে বাড়িয়ে ২৩ বছর করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তবে এ সুযোগ শুধু চলতি বছরের জন্যই কার্যকর হবে। দুই বছর নিয়োগ বন্ধ থাকায় এ বছরের জন্য বিশেষ বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। খবর এনডিটিভির।

গত বুধবার ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ঘোষণা দেয়, অগ্নিপথ প্রকল্পের আওতায় সাড়ে ১৭ থেকে ২১ বছর বয়সের নারী-পুরুষেরা চার বছরের জন্য সেনা, বিমান ও নৌবাহিনীতে চাকরি পাবেন। তাঁদের মূলত প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এ সময় তাঁদের প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার রুপি বেতন এবং ৪ বছর পর ১১ থেকে ১২ লাখ রুপি এককালীন অর্থ দেওয়া হবে। কিন্তু ২৫ শতাংশের বেশি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত তরুণের চাকরি স্থায়ী করা হবে না।

আরও পড়ুন

এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর এ প্রকল্পের বিরোধিতা করে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে তুমুল বিক্ষোভ শুরু হয়। উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানা, পাঞ্জাব, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, ঝাড়খণ্ড, দিল্লিসহ ১০টি রাজ্যে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বয়সসীমা কম হওয়ায় ও চাকরি স্থায়ী না হওয়ায় চাকরিপ্রার্থী শত শত তরুণ রাস্তায় নেমে আসেন।

এমন অবস্থায় বৃহস্পতিবার ভারত সরকারের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত দুই বছরে কোনো নিয়োগ না হওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সরকার ২০২২ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এক বছরের জন্য ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ভারত সরকারের প্রচারবিষয়ক সংস্থা পিআইবির পক্ষ থেকে টুইটারে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত বদলের কথা জানানো হয়। টুইটার পোস্টে লেখা হয়, অগ্নিপথ স্কিম অনুযায়ী সশস্ত্র বাহিনীতে নতুন নিয়োগের ক্ষেত্রে বয়সসীমা সাড়ে ১৭ থেকে ২১ বছর নির্ধারিত থাকবে। তবে ২০২২ সালের জন্য প্রস্তাবিত নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এক বছরের ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অগ্নিপথ স্কিম ২০২২–এর নিয়োগ প্রক্রিয়ার জন্য সর্বোচ্চ বয়সসীমা বাড়িয়ে ২৩ বছর করা হলো।

এই অস্থায়ী চাকরির মাধ্যমে ‘নিয়মিত ক্যাডার সেবায় অন্তর্ভুক্তির জন্য আবেদনের সুযোগ’ থাকছে। ভারতের সেনাবাহিনীর পর্যবেক্ষক ও একাধিক অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মূলত এ বিষয় নিয়েই আপত্তি তুলেছেন। তাঁদের বক্তব্য, চার বছর পর অর্ধশিক্ষিত অবস্থায় আগ্নেয়াস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ নিয়ে এই তরুণেরা বের হবেন। তখন তাঁরা কোথায় যাবেন?

ইতিমধ্যে বিক্ষোভকারীদের শান্ত করতে সরকার বিভিন্ন প্রচার চালাচ্ছে। একের পর এক টুইট করছে তথ্য ও সম্প্রচারবিষয়ক মন্ত্রণালয়। অগ্নিপথ স্কিম–সংক্রান্ত ভ্রান্ত ধারণার বিপরীতে ‘বাস্তবচিত্র’ উপস্থাপন করছে তারা।

এ স্কিমের পক্ষে ১০টি বিষয় তুলে ধরছে সরকার। নিয়োগ প্রার্থীদের আশ্বস্ত করা হচ্ছে যে তাঁরা সেনাবাহিনীতে চার বছরের কাজ শেষ করার পর বিপদে পড়বেন না।