মালয়েশীয় আইনে জাকির নায়েক বিশেষ সুবিধা পাবেন না

জাকির নায়েক
জাকির নায়েক

মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন ইয়াসিন বলেছেন, যদি জাকির নায়েক সে দেশের আইন লঙ্ঘন করেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে কোনো দ্বিধা করবে না মালয় সরকার। সোমবার মালয়েশিয়ার বুকিত আমানে এক অনুষ্ঠান শেষে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন।

মহিউদ্দিন ইয়াসিন বলেন, জাকির নায়েক মালয়েশিয়ার আইনের কাছে দায়বদ্ধ। নাগরিক-অ-নাগরিক প্রশ্নে আইন সবার জন্য সমান। জাকির নায়েক মালয়েশিয়ার একজন স্থায়ী বাসিন্দা—তাতে কিছু যায়-আসে না।

মালয় মেইলকে মহিউদ্দিন বলেন, ‘আগের সরকার (বারিসান ন্যাশনাল) জাকির নায়েককে স্থায়ী বসবাসের অনুমোদন দিয়েছিল। তিনি আমাদের দেশে অন্য নাগরিকদের মতো আছেন। তবে কোনো ক্ষেত্রে আইন ভঙ্গ করে থাকলে অন্য নাগরিকদের মতোই তাঁর বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ সম্প্রতি সে দেশে জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে বেশ কিছু বিষয়ে বিতর্ক ওঠে বলে জানা যায়। এমনও অভিযোগ রয়েছে, তিনি সম্প্রতি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে প্রকাশ্যে নাজিব রাজাকের পক্ষ নিয়েছিলেন।

ভারতে মামলা হওয়ার পর গত বছর জাকির নায়েক মালয়েশিয়ায় আশ্রয় চাইলে তাঁকে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি দেয় নাজিব রাজাকের সরকার। সে সময় জাকিরের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার ও উগ্রপন্থাকে উসকে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিল ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। একই অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মামলাও হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় তাঁর প্রতিষ্ঠিত ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনসহ (আইআরএফ) পিস টিভি। অভিযোগ ওঠার পর ২০১৬ সালের ১ জুলাই ভারত ছেড়ে যেতে বাধ্য হন ৫৩ বছর বয়সী জাকির নায়েক।

ফ্রিমালয়েশিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়, জাকির নায়েককে ফেরত পাঠাতে ভারত সরকার বারবার তাগাদা দিয়ে এলেও এখন পর্যন্ত এতে কোনো সাড়া দেয়নি মালয়েশীয় সরকার।

বাংলাদেশেও তাঁর বিরুদ্ধে উগ্রবাদ ছড়ানোর অভিযোগ ওঠে ২০১৬ সালের ১ জুলাই হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার পর। তখন বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, নিহত জঙ্গিদের কয়েকজন জাকির নায়েকের বক্তব্যে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার পর বাংলাদেশেও জাকির নায়েকের বিভিন্ন বিষয়ের ওপর নজরদারি বাড়ানো হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় পিস টিভি বাংলার সম্প্রচার।

গত বছরের নভেম্বরে ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) জাকির নায়েক ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলা করে। আইআরএফের প্রেসিডেন্ট ও এর সদস্যরা ‘অবৈধ কার্যকলাপকে’ প্রশ্রয় দিচ্ছেন উল্লেখ করে দিল্লি হাইকোর্ট সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানকে নিষিদ্ধ ঘোষণার সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছেন। তবে জাকির নায়েক শুরু থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।