মাস্ক না পরে বেরোলেই কফিনে শুইয়ে শাস্তি

মাস্ক না পরে বাইরে বের হওয়ায় এক ব্যক্তিকে শোয়ানো হয়েছে কফিনে। গত বৃহস্পতিবার ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায়এএফপি

দিন যত যাচ্ছে, জীবন তত স্বাভাবিক হচ্ছে। যদিও করোনা মহামারির শেষের দিশা এখনো পাওয়া যায়নি। এরপরও কিছু মানুষের মধ্যে সচেতনতার এতই ঘাটতি যে তারা মাস্ক ছাড়াই বাইরে বের হচ্ছে। সব দেশেই এমন মানুষ রয়েছে। এ ধরনের মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি কিছুটা শায়েস্তা করতে অভিনব এক কৌশল প্রয়োগ করছে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তার একটি এলাকার কর্তৃপক্ষ। সেখানে মাস্ক ছাড়া কেউ বাইরে বের হলে তাকে ধরে সবার সামনে শোয়ানো হচ্ছে কফিনে। এরপর গুনতে বলা হচ্ছে ১ থেকে ১০০।

করোনা মহামারির শুরু থেকেই অনেক দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে মাস্ক ব্যবহারের প্রতি একধরনের অনীহা দেখা গেছে। যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, জার্মানিসহ বেশ কয়েকটি দেশে মাস্কের বিরুদ্ধে বিক্ষোভও হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র আর ব্রাজিলের খোদ রাষ্ট্রপ্রধানেরাই মাস্ক পরার বিপক্ষে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোকে তো একপর্যায়ে দেশটির একটি আদালত নির্দেশই দেন, বাইরে বের হলে তাঁকে মাস্ক পরতে হবে।

বাংলাদেশেও অনেক মানুষ মাস্ক ছাড়া বাইরে বের হচ্ছে। যদিও করোনা মহামারি মোকাবিলায় সরকারের তরফ থেকে মাস্ক পরার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

ছবি ও ভিডিও শেয়ারের সামাজিক মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে বিবিসির এক পোস্টে জানানো হয়, মাস্কের প্রতি মানুষের অনীহার এ সমস্যা মোকাবিলায় ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তার পূর্বাঞ্চলীয় কালিসারি এলাকার কর্তৃপক্ষ কফিনে শোয়ানোর অভিনব কৌশলটি নিয়েছে। ইস্ট জাকার্তা পাবলিক অর্ডিনেন্স এজেন্সির প্রধান বুধি নোভিয়ান সাংবাদিকদের বলেন, তাঁরা আসলে বোঝাতে চাইছেন যে করোনায় সংক্রমিত হলে মৃত্যুঝুঁকি নিছক কিছু নয়। আর তাই মাস্ক ছাড়া বাইরে বের হওয়া মানুষদের প্রকাশ্যে কফিনে শুইয়ে ১ থেকে ১০০ পর্যন্ত গোনানো হচ্ছে। এতে ওই মানুষেরা এবং কফিনের আশপাশ দিয়ে যাওয়া অন্য মানুষেরা সচেতন হবেন বলে তাঁরা মনে করছেন।

তবে সাজা দেওয়ার অভিনব কায়দাটি বিতর্ক সৃষ্টি করেছে ইন্দোনেশিয়ায়। কারণ, দেশটির প্রচলিত আইনে এ ধরনের কোনো সাজার উল্লেখ নেই। আর এ কারণেই গণহারে এই সাজা না দিয়ে প্রচলতি আইনানুসারে জরিমানা করতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন বুধি নোভিয়ান। জাকার্তা পোস্ট–এর তথ্যমতে, ইন্দোনেশিয়ার প্রচলিত আইন অনুসারে মাস্ক ছাড়া বাইরে বের হলে জরিমানার পাশাপাশি সমাজসেবামূলক কাজের নির্দেশ দেওয়ারও বিধান রয়েছে।

সাধারণ মানুষকে মাস্ক পরতে উৎসাহিত করার পাশাপাশি সচেতনতা বাড়াতে আরও বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে জাকার্তার কর্তৃপক্ষ। বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, করোনা মহামারি এখনো শেষ হয়ে যায়নি—এই কথা মানুষকে মনে করিয়ে দিতে রাজধানী জাকার্তায় সম্প্রতি কফিন নিয়ে মিছিল করেছেন নগর কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। এ সময় তাঁদের পরনে ছিল পিপিই।