মিয়ানমারে আবার পুলিশের গুলি, নিহত ৯

গত ১ ফেব্রুয়ারি রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সু চির সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। এ অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশটির সর্বময় ক্ষমতা কুক্ষিগত করেন সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং। গ্রেপ্তার করা হয় স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি ও প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টকে।

মিয়ানমার জান্তা সরকারবিরোধী বিক্ষোভে ধোঁয়া ছড়ানোর গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ
ছবি রয়টার্স।

মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে আবার গুলি চালিয়েছে নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী। প্রত্যক্ষদর্শী এবং স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আজ বুধবার পুলিশের গুলিতে ৯ জন নিহত হয়েছেন।

এক মাস ধরে চলমান সংকট অবসানের জন্য মিয়ানমারকে আঞ্চলিক শক্তিগুলোর চাপ প্রয়োগের এক দিন পর এ ঘটনা ঘটল।

দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তর শহর মান্দালায়ে সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন বলে এক প্রত্যক্ষদর্শী এবং স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়। প্রধান শহর ইয়াঙ্গুন শহরে পুলিশের গুলিতে একজন নিহত হয়েছেন বলে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন।

মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম দ্য মনিওয়া গেজেট এক প্রতিবেদনে জানায়, কেন্দ্রীয় শহরটিতে পুলিশের গুলিতে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। আরেক মধ্যবর্তী শহর মাইঙ্গিয়ানেও গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন মারা গেছেন বলে মোয়ে মিন্ট হেইন নামের এক অ্যাকটিভিস্ট জানান।

২৫ বছর বয়সী এ তরুণ নিজেও পায়ে আঘাত পান। রয়টার্সকে টেলিফোনে তিনি বলেন, ‘তারা আমাদের দিকে তাজা বুলেট ছোড়ে। মাথায় গুলি লেগে একজন নিহত হয়েছে, একটা কিশোর ছেলে সে।’

দ্য মিয়ানমার নিউজ এজেন্সি জানায়, ইয়াঙ্গুনে বিক্ষোভ থেকে ৩০০ জনকে আটক করা হয়েছে।

জান্তা সরকারের একজন মুখপাত্রের কাছে ফোন করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

গতকাল মঙ্গলবার দক্ষিণ-পূর্ব প্রতিবেশী দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ক্ষমতাচ্যুত সরকারের নেত্রী অং সান সু চিকে মুক্তি এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে জান্তা সরকারকে আহ্বান জানালেও তা ব্যর্থ হয়।

গত ১ ফেব্রুয়ারি রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সু চির সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। এ অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশটির সর্বময় ক্ষমতা কুক্ষিগত করেন সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং। গ্রেপ্তার করা হয় স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি ও প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টকে।

অভ্যুত্থানের পর থেকে এর বিরুদ্ধে রাজপথে বিক্ষোভ করে আসছেন হাজার হাজার মানুষ। অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ শুরুর পর থেকে গত রোববার ছিল সবচেয়ে রক্তাক্ত দিন। জাতিসংঘ বলেছে, শহরগুলোতে বিক্ষোভের সময় সেনা ও পুলিশের গুলিতে অন্তত ১৮ জন প্রাণ হারান ওই দিন। এরপর আজ এক দিনে ৯ জনের প্রাণ গেল। এ পর্যন্ত বিক্ষোভে নিহত হয়েছেন ৩০ জন। আটক করা হয়েছে এক হাজারের বেশি বিক্ষোভকারীকে।