মিয়ানমারে কারেন বিদ্রোহীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর তীব্র লড়াই

কারেন বিদ্রোহীরা একটি সেনাঘাঁটিতে হামলা করলে দুই পক্ষের মধ্যে তীব্র লড়াই শুরু হয়
ছবি: এএফপি

মিয়ানমারের পূর্বাঞ্চলে থাই সীমান্তের কাছে আজ মঙ্গলবার সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের তুমুল লড়াইয়ের খবর পাওয়া গেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

খবরে বলা হয়, সংখ্যালঘু কারেন জাতিগোষ্ঠীর বিদ্রোহীরা একটি সেনাঘাঁটিতে হামলা করলে দুই পক্ষের মধ্যে তীব্র লড়াই শুরু হয়। মিয়ানমারে গত ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের পর সেনাবাহিনীর সঙ্গে কারেন বিদ্রোহীদের যতগুলো লড়াই-সংঘাত হয়েছে, তার মধ্যে আজ সবচেয়ে তীব্র ছিল।

কারেন বিদ্রোহীদের সঙ্গে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর তীব্র সংঘাতের ঘটনা এমন একসময় ঘটল, যখন দেশটিতে অস্থিরতার অবসানে আহ্বান জানিয়ে পাঁচ দফা প্রস্তাব দিয়েছে আঞ্চলিক জোট আসিয়ান। আসিয়ানের প্রস্তাব ইতিবাচকভাবে বিবেচনার কথা জানিয়েছে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা।

মিয়ানমারে রক্তপাত বন্ধের পথ খুঁজতে গত সপ্তাহান্তে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় সদস্যদেশগুলোর সম্মেলন আয়োজন করে আসিয়ান। বিক্ষোভ দমনের নামে রক্তপাত বন্ধ, আলোচনার পথ খোলা রাখা, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও রাজবন্দীদের মুক্তি—মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইয়ের কাছে মোটা দাগে এই প্রস্তাবগুলো রাখেন আসিয়ানের নেতারা। মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান এই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

আসিয়ান নেতারা বলেন, মিয়ানমারে সহিংসতার অবসানে জান্তা সরকার ঐকমত্যে পৌঁছেছে। একই সঙ্গে জান্তা সরকার মিয়ানমারের বিবদমান পক্ষগুলোর সঙ্গে আলোচনার ব্যাপারেও সম্মত হয়েছে।

কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন (কেএনইউ) মিয়ানমারের সবচেয়ে পুরোনো বিদ্রোহী গোষ্ঠী। কেএনইউ দাবি করেছে, তারা সালবিন নদীর পশ্চিম তীরে অবস্থিত মিয়ানমার সেনাবাহিনীর একটি ক্যাম্প দখল করে নিয়েছে।

মিয়ানমার থেকে থাইল্যান্ডকে পৃথক করেছে এই নদী। নদীর থাইল্যান্ড অংশের গ্রামবাসীর ভাষ্য, আজ সূর্যোদয়ের আগেই নদীর মিয়ানমার অংশে তুমুল গোলাগুলি শুরু হয়।

সংঘাতের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, বনভূমিঘেরা পাহাড়ের পাশ দিয়ে ধোঁয়ার কুণ্ডলী উড়ছে।

বিদ্রোহী গোষ্ঠীটির বৈদেশিক বিষয়ক প্রধান স তাও নি দাবি করেন, আজ ভোর ৫টা থেকে ৬টার মধ্যে সেনাঘাঁটিটি দখল করে নেয় কেএনইউ।

গত ১ ফেব্রুয়ারি রক্তপাতহীন এক অভ্যুত্থানে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। গ্রেপ্তার করা হয় অং সান সু চিসহ দেশটির রাজনৈতিক নেতাদের। তারপর থেকে দেশটিতে তুমুল বিক্ষোভ চলছে। চলমান এই বিক্ষোভে মিয়ানমারের সেনা-পুলিশের গুলিতে এখন পর্যন্ত শিশুসহ সাত শতাধিক বেসামরিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আটক বা গ্রেপ্তার হয়েছেন সাংবাদিক, শিল্পীসহ তিন সহস্রাধিক বিক্ষোভকারী।