মিয়ানমারে দমন-পীড়ন এখনই বন্ধের আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস
ছবি: এএফপি

মিয়ানমারে অবিলম্বে দমন-পীড়ন বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

আজ সোমবার জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস মিয়ানমারের সেনা কর্তৃপক্ষের প্রতি এই আহ্বান জানান।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে আগে ধারণ করা ভিডিও বার্তায় আন্তোনিও গুতেরেস মিয়ানমারের সেনাশাসকদের পাশবিক শক্তিপ্রয়োগের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন।

জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, ‘অবিলম্বে দমন-পীড়ন বন্ধ করার জন্য আজ আমি মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানাই।’

মিয়ানমারের সেনাশাসকদের উদ্দেশে আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘বন্দীদের মুক্তি দিন। সহিংসতা বন্ধ করুন। মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা দেখান।’

মিয়ানমারের সাম্প্রতিক সাধারণ নির্বাচনে জনগণ যে রায় দিয়েছেন, তার প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে দেশটির সেনা কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান জাতিসংঘের মহাসচিব।

মিয়ানমারে সেনাশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে এখন পর্যন্ত তিনজন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন।

গত শনিবার মিয়ানমারের মান্দালয় শহরে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালায় দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। গুলিতে ২ জন নিহত ও অন্তত ২০ জন আহত হন। মিয়ানমারে সেনাশাসনের বিরুদ্ধে দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলমান বিক্ষোভের সবচেয়ে সহিংস ও রক্তক্ষয়ী দিন ছিল শনিবার।

তার আগে ৯ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোতে সেনাশাসনবিরোধী বিক্ষোভকালে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে আহত হন এক নারী বিক্ষোভকারী। ১৯ ফেব্রুয়ারি তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান ও চলমান দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে যুক্তরাজ্যও সরব হচ্ছে। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে বক্তব্য দেবেন। তিনি মিয়ানমারে দমন-পীড়ন বন্ধসহ দেশটির গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চিকে মুক্তির দাবি জানাবেন।

মিয়ানমারে গত নভেম্বরে সাধারণ নির্বাচন হয়। এই নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) বিপুল ভোটে জয়ী হয়। তবে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তোলে দেশটির সেনাবাহিনী। ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে তারা ১ ফেব্রুয়ারি ভোরে রক্তপাতহীন অভ্যুত্থান করে। অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। আটক করে এনএলডির নেত্রী সু চিসহ দলটির শীর্ষ নেতাদের। একই সঙ্গে মিয়ানমারে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করে সেনাবাহিনী।

মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে টানা বিক্ষোভ করছেন দেশটির হাজারো গণতন্ত্রপন্থী। দিন দিন এই বিক্ষোভ জোরালো হচ্ছে। আজ সোমবারও দেশটিতে গণতন্ত্রপন্থীদের বিক্ষোভসহ অন্যান্য প্রতিবাদী কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে।

বিক্ষোভ দমাতে মিয়ানমারের সেনা কর্তৃপক্ষ শক্তিপ্রয়োগ করছে। বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সেনা কর্তৃপক্ষ শক্তিপ্রয়োগের নিন্দা জানাচ্ছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। একই সঙ্গে তারা উদ্বেগও প্রকাশ করছে।