মিয়ানমারে মুক্তি পেলেন রয়টার্সের দুই সাংবাদিক

কারামুক্তির পর রয়টার্সের দুই সাংবাদিক। ইয়াঙ্গুন, মিয়ানমার, ৭ মে। ছবি: রয়টার্স
কারামুক্তির পর রয়টার্সের দুই সাংবাদিক। ইয়াঙ্গুন, মিয়ানমার, ৭ মে। ছবি: রয়টার্স

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে প্রতিবেদন করে দণ্ড পাওয়া রয়টার্সের দুই সাংবাদিককে আজ মঙ্গলবার মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রেসিডেন্টের বিশেষ ক্ষমায় তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়।

এই দুই সাংবাদিক হলেন ওয়া লোন (৩৩) ও কিয়াও সো ওও (২৯)। ১০ রোহিঙ্গা পুরুষ ও যুবককে হত্যার ঘটনা তদন্ত করার সময় ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। সরকারি গোপনীয়তা আইন ভঙ্গের অভিযোগে দুজনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ১৭ মাসের বেশি সময় ধরে বন্দী থাকার পর অবশেষে ছাড়া পেলেন তাঁরা।

এক ভিডিওতে দেখা যায়, ইয়াঙ্গুনের কুখ্যাত ইনসেন কারাগার থেকে বের হওয়ার পর তাঁদের ঘিরে ধরেন গণমাধ্যমকর্মীরা। রয়টার্সের প্রধান সম্পাদক স্টিফেন অ্যাডলার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘মিয়ানমার আমাদের সাহসী সাংবাদিকদের কারামুক্ত করায় দারুণ খুশি হয়েছি। ৫১১ দিন ধরে কারাবাস করা এই দুই সাংবাদিক সারা বিশ্বে গণমাধ্যম স্বাধীনতার প্রতীক হয়ে উঠেছেন। তাঁদের ফিরে আসাকে আমরা স্বাগত জানাই।’

২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে রাখাইন রাজ্যে সংঘটিত গণহত্যার চিত্র ফাঁস করার অপরাধে তাঁদের এই সাজা হয়েছে বলে ধারণা করছেন সমর্থকেরা। তবে মিয়ানমার সরকারের দাবি, দুই সাংবাদিকের কাছে নিরাপত্তাবিষয়ক দলিল-দস্তাবেজ ছিল। এই নথির জের ধরে প্রায় সাড়ে সাত লাখ মুসলমান রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে যায়।

গণহত্যা নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে সাংবাদিকতার অন্যতম শ্রেষ্ঠ পদক পুলিৎজার জিতেছেন ওয়া লোন ও কিয়াও সো ওও।

মিয়ানমারের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, রোহিঙ্গা জঙ্গিদের উৎখাত করতে রাখাইনজুড়ে নৃশংস অভিযান চালিয়েছে তারা। তবে রয়টার্সের প্রতিবেদনের সূত্র ধরে গণহত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ত সৈনিকদের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

রয়টার্সের সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে যে মামলা করা হয়েছে, এতে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়ে নতুন করে নড়েচড়ে বসেছে গোটা বিশ্ব। বিশিষ্ট মানবাধিকার অ্যাটর্নি আমাল ক্লুনি যোগ দিয়েছেন আইনি দলে। ওয়া লোন এবং কিয়াও সো ওওকে নিয়ে নিবন্ধ প্রকাশ করেছে টাইম সাময়িকী।

অধিকার সংরক্ষণ দল ও আইনি বিশেষজ্ঞরা জানান, রয়টার্সের সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি অনিয়মে জর্জরিত ছিল।