মিয়ানমারে সংঘর্ষে নিহত ৬, সু চির বিচারে সাক্ষ্য গ্রহণ
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের লড়াইয়ে ছয়জন নিহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার সকালে মান্দালাইয়ের চান মা থার্সি শহরে সংঘর্ষের ঘটনায় চারজন জান্তাবিরোধী বিদ্রোহী ও দুজন সেনা নিহত হন। দেশটির সামরিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করে জানায়, বিদ্রোহীরা ছোট অস্ত্র ও গ্রেনেড দিয়ে হামলা চালান।
রাজনৈতিক বন্দীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা একটি সংগঠন বলেছে, মিয়ানমারে ফেব্রুয়ারির পর থেকে এ পর্যন্ত পুলিশের গুলিতে কমপক্ষে ৮৭০ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন।
গত ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারের জান্তা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশটির ক্ষমতা দখলের পর থেকে দেশজুড়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় লোকজন প্রতিরক্ষা বাহিনী তৈরি করে নৃশংস জান্তার বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছেন। তবে বেশির ভাগ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে প্রত্যন্ত অঞ্চলে।
জান্তার তথ্য বিভাগের এক বিবৃতিতে বলা হয়, চান মা থার্সি শহরে নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান পরিচালনার সময় ছোট অস্ত্র থেকে গুলি ও গ্রেনেড হামলার মুখে পড়ে। এ অভিযানে দুজন সেনা নিহত হন। এ ছাড়া অন্তত ১০ জন আহত হন। এ ঘটনায় চারজন ‘সন্ত্রাসী’ নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া অস্ত্র, গোলাবারুদসহ আটজনকে আটক করা হয়েছে।
মান্দালাইয়ের একজন অধিবাসী বলেছেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে আমাদের বাড়ি দূরে হলেও আমরা ভারী গোলাবারুদের শব্দ শুনেছি।’
জান্তার মুখপাত্র বলেন, ‘বিদ্রোহী প্রতিরক্ষা গ্রুপের আরও চারজন সদস্য গাড়ি করে পালানোর সময় দুর্ঘটনার মারা গেছেন।’
ইয়াঙ্গুনে মার্কিন দূতাবাস টুইটারে বলেছে, মান্দালাইয়ে লড়াইয়ে ঘটনার ওপর চোখ রাখছে তারা। দেশটিতে সামরিক উত্তেজনায় বিরক্তি প্রকাশ করে দ্রুত সহিংসতা বন্ধের আহ্বানও জানিয়েছে দেশটি।
রাজনৈতিক বন্দীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা একটি সংগঠন বলেছে, মিয়ানমারে ফেব্রুয়ারির পর থেকে এ পর্যন্ত পুলিশের গুলিতে কমপক্ষে ৮৭০ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন।
এদিকে মিয়ানমারের আদালতে ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার বিচারকাজ চলছে।
জান্তা সরকারের অভিযোগ, গত বছর নির্বাচনে সু চি ও তাঁর দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) কারচুপি করেছে। এ ছাড়া সু চির বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ওয়াকিটকি রাখা, দুর্নীতি, করোনাভাইরাসের বিধিনিষেধ লঙ্ঘন এবং রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইন ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সু চির ১৪ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
সু চির আইনজীবী বলেন, গত বছর নির্বাচনের সময় সু চির কোভিড-১৯ বিধিনিষেধ লঙ্ঘনবিষয়ক সাক্ষ্য শোনেন আদালত। এ ছাড়া গতকাল পৃথক রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয় নেপিডোর বিশেষ আদালতে। ওই আদালতে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
আগামী ২৬ জুলাইয়ের মধ্যে বিচারকাজ শেষ হবে বলে আশা করছেন সুচির আইনজীবীরা।