মিয়ানমারে ৫ টিভির ইউটিউব চ্যানেল সরাল প্ল্যাটফর্মটি

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী পরিচালিত পাঁচটি টেলিভিশন প্রতিষ্ঠানের ইউটিউব চ্যানেল সরিয়ে দিয়েছে ইউটিউব প্ল্যাটফর্ম। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে অ্যালফাবেট কর্তৃপক্ষের অধীন ইউটিউব এ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বলে জানানো হয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রশ্নের জবাবে ইউটিউবের একজন মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমরা বেশ কিছু চ্যানেল ইউটিউব থেকে সরিয়ে দিয়েছি। এ ছাড়া বেশ কিছু ভিডিও মুছে দেওয়া হয়েছে। আমাদের কমিউনিটি নীতিমালা এবং প্রযোজ্য আইন অনুসারে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

ইউটিউব থেকে যেসব চ্যানেল সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ছাড়াও এমআরটিভি, মাইওয়াদি মিডিয়া, এমডাব্লিউডি ভেরাইটি ও এমডাব্লিডি মিয়ানমার রয়েছে।

মিয়ানমারের সেনাবাহিনী গত ১ ফেব্রুয়ারি রক্তপাতহীন এক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দখল করে। গ্রেপ্তার করা হয় স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি ও প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টকে। একাধিক মামলা দেওয়া হয়েছে তাঁদের নামে। এরপর দেশটিতে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়।

প্রতিদিনই রাজপথে বিক্ষোভকারীদের মিছিল লক্ষ করে চলছে সেনা ও পুলিশের গুলি। চলছে গণগ্রেপ্তার। গত এক মাসের বিক্ষোভে দেশটিতে অন্তত ৫৪ জন নিহত হয়েছেন। আটক হয়েছেন ১ হাজার ৭০০-এর বেশি বিক্ষোভকারী। এর মধ্যে এ পদক্ষেপ নিল ইউটিউব। গত বুধবার দেশটিতে বিক্ষোভে ৩৮ জন মারা যান। জাতিসংঘের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিক্ষোভ দমনে নিরাপত্তা বাহিনী কঠোর অবস্থান নেওয়ায় এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

গত ফেব্রুয়ারি মাসে এমআরটিভির পেজগুলো ফেসবুক বন্ধ করে দেয়। এর আগে ২০১৮ সালে সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত মাইওয়াদি মিডিয়া বন্ধ করে দেয় ফেসবুক। ওই সময়ে মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইংসহ এক ডজনের বেশি জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে ফেসবুকে নিষিদ্ধ করা হয়।

বর্তমানে ফেসবুক মিয়ানমারের সেনাবাহিনী–সংক্রান্ত সব পেজ বন্ধ করে দিয়েছে।
ইউটিউব ও ফেসবুক ছাড়াও অন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো সেনাবাহিনীর বিভিন্ন কনটেন্ট পর্যালোচনা করছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমারের বিক্ষোভে জান্তার দমনপীড়ন দিন দিন বাড়ছে। দেশটির সেনা ও পুলিশ সদস্যরা প্রকাশ্যে বিক্ষোভকারীদের হত্যার হুমকি দিচ্ছেন। ভিডিও শেয়ারের অ্যাপ টিকটক ব্যবহার করে এমন হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

গবেষকেরা বলছেন, ফেসবুক থেকে সেনাবাহিনীকে নিষিদ্ধ করার পর থেকে তারা অন্য প্ল্যাটফর্মে তাদের উপস্থিতি বাড়াতে চেষ্টা করছে।

গত ৮ নভেম্বরে মিয়ানমারের নির্বাচন ঘিরে ইউটিউব যথেষ্ট উদ্যোগ না দেখানোয় সমালোচনা করেন গবেষকেরা। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউটিউবে অনেক চ্যানেল থেকে নির্বাচন–সংক্রান্ত ভুয়া তথ্য ছড়ানো হয়।

গত বছরের ডিসেম্বরে সংঘবদ্ধ ভুয়া তথ্য ছড়ানোর নেটওয়ার্কে যুক্ত ৩৪টি চ্যানেল বন্ধ করার কথা জানায় গুগল।