মিয়ানমারের জান্তার সমালোচনায় মুখর আসিয়ান নেতারা

ব্রুনেই–এর সভাপতিত্বে আঞ্চলিক জোট আসিয়ানের বৈঠক শুরু হয় মঙ্গলবার।
ছবি : রয়টার্স

আসিয়ানের পাঁচ দফা প্রস্তাব উপেক্ষা করায় মিয়ানমারের জান্তার তীব্র সমালোচনা করেছেন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নেতারা। মঙ্গলবার আঞ্চলিক জোট আসিয়ানের বৈঠক শুরু হয়। এ বৈঠকে মিয়ানমারের কোনো প্রতিনিধি ছিল না।

বৈঠক শুরুর আগেই আসিয়ানের নেতারা মিয়ানমারের শীর্ষ জেনারেল মিন অং হ্লাইংকে বৈঠক থেকে বাদ দেন। ছয় মাস আগে শান্তি স্থাপনে মিয়ানমার যে রোডম্যাপে সম্মতি দিয়েছিল, তা উপেক্ষা করায় হ্লাইংকে আসিয়ানের বৈঠক থেকে বাদ দেওয়া হয়।

তবে দ্য আসোসিয়েশন অব সাউথওয়েস্ট এশিয়ান নেশসনের (আসিয়ান) পক্ষ থেকে বলা হয়, হ্লাইংকে বাদ দেওয়া হলেও দেশটির একজন অরাজনৈতিক ব্যক্তিকে বৈঠকে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হবে। তবে গত সোমবার জান্তার পক্ষ থেকে এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা হয়। জান্তার পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা কেবল তাদের নেতা বা একজন মন্ত্রীকে যোগদানের সুযোগ দিলে প্রস্তাবে রাজি হবে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, আসিয়ানের বৈঠক থেকে বাদ পড়াটা মিয়ানমারের জন্য বড় অপমান এবং আসিয়ানের মতো একটি জোটের পক্ষ থেকে সাহসী পদক্ষেপ। সাধারণত সদস্যদেশগুলোর যেকোনো সংকটে যুক্ত থাকা এবং অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতিতে অটল থাকার নীতি অনুসরণ করে থাকে আসিয়ান। গতকাল শুরু হওয়া এ সম্মেলন চলবে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত।

আগামী বছর আসিয়ানের চেয়ারম্যান হতে যাচ্ছে কম্বোডিয়া। দেশটির প্রধানমন্ত্রী হান সেন বলেন, আসিয়ানের কাঠামো থেকে মিয়ানমারকে বাদ দেওয়া হয়নি। মিয়ানমার তাদের অধিকার হাতছাড়া করেছে।

ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেটনো মারসুদি বলেন, আসিয়ানের একটি জায়গা মিয়ানমারের জন্য বরাদ্দ ছিল। কিন্তু তারা যুক্ত হতে চায়নি।

রেটনো আরও বলেন, ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো তাঁর মন্তব্যে আসিয়ানের নেতাদের কাছে মিয়ানমারের অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। উইদোদো আরও বলেন, আসিয়ানের সিদ্ধান্তে মিয়ানমারের অরাজনৈতিক প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্তটি কঠিন ছিল। কিন্তু এটা পালন করা উচিত ছিল।

সামরিক শাসিত মিয়ানমারের পরিস্থিতি আঞ্চলিক জোট আসিয়ানের জন্য নিজস্ব অঞ্চলের মধ্যে উদ্ভূত সমস্যা সমাধান করার যোগ্যতার পরীক্ষা বলে মন্তব্য করেছেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান-ওচা। গতকাল আসিয়ানের লিডার্স সম্মেলনে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মিয়ানমারের সঙ্গে আসিয়ানের গঠনমূলক ভূমিকা সর্বাগ্রে গুরুত্বপূর্ণ এবং এ জোটের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতার ওপর প্রভাব ফেলবে।