রেস্তোরাঁয় ছাড় পেতে নামবদল

জাপানের জনপ্রিয় খাবার সুশি
ছবি: রয়টার্স

নানা কারণে মানুষ নিজের নাম বদলান। কোনো সনদে থাকা নাম বদলাতে সরকারি নিয়মনীতি ও আইনি প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যেতে হয়। এভাবে নাম বদলানোর পেছনে থাকে বড় কোনো উদ্দেশ্য। তবে নাম বদলের কারণ যদি হয় রেস্তোরাঁয় ছাড় পাওয়ার মতো কারণ, তবে অবাক হতেই হয়। এমন ঘটনা ঘটেছে তাইওয়ানে। রেস্তোরাঁয় ছাড় পেতে নামের সঙ্গে নতুন শব্দ যুক্ত করে নাম বদলে ফেলার যেন হিড়িক লেগেছে তাইওয়ানের তরুণদের মধ্যে। এ প্রবণতায় রীতিমতো বিরক্ত তাইওয়ানের সরকারি কর্মকর্তারা।

ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, ঘটনার শুরু তাইওয়ানের জনপ্রিয় একটি চেইন রেস্তোরাঁর হাত ধরে। তাদের প্রচারণায় বলা হয়, গ্রাহকের নামের মধ্যে চীনের ভাষার শব্দ ‘গুই য়ু’ বা ইংরেজিতে ‘স্যামন’ শব্দ থাকলে তিনি পাঁচ সঙ্গীসহ দুই দিন বিনা মূল্যে সুশি খেতে পারবেন।

জাপানি খাবার সুশি তাইওয়ানেও ভীষণ জনপ্রিয়। এ প্রচারণার পরপরই তাইওয়ানে নাম বদলের হিড়িক পড়ে যায়। বিনা মূল্যে সুশি খেতে গত কয়েক দিনে অন্তত ১৫০ তরুণ-তরুণী নাম বদলের জন্য সরকারি দপ্তরে আবেদন করেন। তাঁরা সবাই নিজেদের নামে গুই য়ু বা স্যামন শব্দটি যুক্ত করতে চান।

তাইওয়ানের দক্ষিণাঞ্চলীয় কাওশিয়াং শহরের একজন কলেজশিক্ষার্থী তাঁর নাম বদলে রেখেছেন বাও চেং গুই য়ু। তাঁর ডাকনাম মা। তিনি জানান, নামের মাঝে গুই য়ু শব্দ যুক্ত করায় তিনি বন্ধুদের নিয়ে ওই রেস্টুরেন্টে ৭ হাজার তাইওয়ানিজ ডলারের বেশি (২৩৫ মার্কিন ডলার) মূল্যমানের সুশি খেতে পেরেছেন। এই তরুণী আরও বলেন, ‘আমি আমার নাম বদলে ফেলেছি। আমার নতুন নামের অর্থ “ভীষণ সুন্দর দেখতে স্যামন”। আমার দুই বন্ধু্ও তাদের নাম পরিবর্তন করেছে। রেস্টুরেন্টে ছাড় পাওয়ার পর আমরা আবার আগের নামে ফিরে যাব।’

স্যামনকেন্দ্রিক আরও কয়েকটি নাম তাইওয়ানের তরুণদের মধ্যে ভীষণ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এর মধ্য রয়েছে স্যামন প্রিন্স, মিটিওর স্যামন কিং, স্যামন ফ্রায়েড রাইস। তাইওয়ানের সংবাদমাধ্যম ইউনাইটেড ডেইলি নিউজ-এর খবরে বলা হয়েছে, একজন নিজের নামে ৩৬টি শব্দ যুক্ত করার আবেদন করেছেন। তিনি কাঁকড়া, চিংড়িসহ একাধিক সিফুডের নাম নিজের নামের সঙ্গে যুক্ত করতে চান।

তবে নাম বদলের এমন হিড়িক খুশি করতে পারেনি তাইওয়ানের সরকারি কর্তাদের। তাইওয়ানের আইন অনুযায়ী, একজন নাগরিক তিনবার নাম বদলের আবেদন করতে পারেন। তবে তরুণদের মধ্যে এমন ঠুনকো কারণে নাম বদলে ফেলার প্রবণতায় বিরক্ত তাঁরা।

তাইওয়ানের উপস্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চেন সাং-ইয়েন বলেন, ‘এ ধরনের ঠুনকো কারণে নাম বদলের আবেদন সময় নষ্ট ছাড়া আর কিছুই নয়। এতে অপ্রয়োজনীয় দাপ্তরিক কাজ বেড়ে যায়। আশা করছি, সবাই বিষয়টি বুঝতে পারবেন।’