শিগগিরই কাবুল দখল করতে পারবে না তালেবান
আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করে নিলে কাবুল তালেবানের দখলে চলে যেতে পারে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কাবুলের পতন অবশ্যম্ভাবী নয়। এটি নির্ভর করে আফগানের প্রতিরক্ষা বাহিনীকে আরও ভালোভাবে পরিচালনার ওপর। মার্কিন বিশেষজ্ঞদের বরাতে এএফপির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে আবার বিদ্রোহীরা ক্ষমতায় আসতে পারে বলে উদ্বেগের মুখে আফগানিস্তানবিষয়ক বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, দুর্বল নেতৃত্ব, দুর্নীতি ও নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে জাতিগত বিভক্তির কারণে তালেবান সুবিধা পেতে পারে। তবে তা অধিকাংশই নির্ভর করছে প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির সরকার কতটা কার্যকরভাবে তা সামাল দেবে, তার ওপরে।
এদিকে গতকাল দেশের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে আলোচনায় গতকাল ওয়াশিংটন রওনা হয়েছেন আশরাফ গনি।
ওয়াশিংটন আগামী সেপ্টেম্বর মাস নাগাদ আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে। আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের চলমান প্রক্রিয়ার মধ্যে দেশটিতে হামলা জোরদার করেছে তালেবান। তারা ইতিমধ্যে আফগানিস্তানের কয়েক ডজন জেলা দখল করেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি ও দেশটির শান্তি প্রক্রিয়ার প্রধান আবদুল্লাহ হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল গত বুধবার এক প্রতিবেদনে বলে, মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ৬ থেকে ১২ মাসের মধ্যেই তালেবানরা দেশটির রাজধানী দখলে নিতে পারে।
ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের কর্মকর্তা অ্যান্ড্রু ওয়াটকিনস বলেন, ‘আফগান সরকার যে ধরনের আঞ্চলিক ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে তার আকার ও গতি আসলে অস্বীকার করার মতো নয়। তবে কাবুলের পতন এখনই হচ্ছে না।’
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলা হয়। সেই হামলার জেরে আফগানিস্তানে সামরিক অভিযানে যায় যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ইতিহাসের দীর্ঘতম এ যুদ্ধের ২০ বছর পূর্তির আগেই আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে গত এপ্রিলে ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। এই ঘোষণা অনুযায়ী, আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের কার্যক্রম অনেকটা এগিয়ে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্র বলছে, আফগানিস্তানে তাদের সামরিক উপস্থিতি থাকবে না। কিন্তু কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও মানবিক সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
অবশ্য সংশ্লিষ্ট অনেক বিশ্লেষক আগে থেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করে বলে আসছেন, আফগানিস্তান থেকে সব বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের পর তালেবান জঙ্গিরা দেশটির ক্ষমতা দখল করে নিতে পারে।