শিনজো আবের হামলাকারীকে নিয়ে নানা তথ্য

এই রাস্তাতেই বক্তব্য দেওয়ার সময় গুলি করা হয় শিনজো আবেকে
ছবি: রয়টার্স

জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের হামলাকারীকে আটক করা হয়েছে। তবে তিনি কে বা কেন এই হামলা চালালেন, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য জানা যায়নি। পুলিশ হামলাকারীকে নিয়ে বিভিন্ন তথ্য দিচ্ছে।

স্থানীয় সময় আজ শুক্রবার সকালে জাপানের প্রধান হোনশু দ্বীপের পশ্চিমের নারা জেলায় এক নির্বাচনী প্রচারে ভাষণ দেওয়ার সময় গুলি করা হয় শিনজো আবেকে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা ঘটনার বিবরণ দেওয়ার সময় বলেন, গুলি করার পর সঙ্গে সঙ্গে পড়ে যান জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। এরপর রক্তের স্রোত বয়ে যায়।

গুলির পর দ্রুত শিনজো আবেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সরকারের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে যা বলা হয়েছে তা হলো, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তবে সরকারের ভেতরের কিছু সূত্র জাপানের সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা তাঁর মধ্যে জীবনের লক্ষণ দেখতে পাওয়া যায়নি। তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও বলছে, নারা শহরে ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির এক প্রার্থীর সমর্থনে ভাষণ দেওয়ার সময় এক বন্দুকধারী আবেকে লক্ষ্য করে দুটি গুলি ছোড়েন। ওই বন্দুকধারী নিকটবর্তী একটি ভবনে অবস্থান করছিলেন।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী তাৎক্ষণিকভাবে পড়ে গেলে প্রত্যক্ষদর্শীরা রক্তের প্রবাহ বয়ে যেতে দেখেছেন। পুলিশ এবং নিরাপত্তারক্ষীরা চারপাশের এলাকা ঘিরে ফেলে। ভবন থেকে নেমে আসা বন্দুকধারীকে গ্রেপ্তার করেছে নারা পুলিশ।

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ওই হামলাকারীর নাম তাৎসুইয়া ইয়ামাগামি। তাঁর বয়স ৪২ বছর বলে জানানো হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার চেষ্টা চালানোর কারণ সম্পর্কে কিছু জানায়নি পুলিশ। তবে বন্দুকধারী ইয়ামাগামি ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা না করায় ধারণা করা হচ্ছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তাঁর কোনো বিদ্বেষ থাকতে পারে। অন্য কয়েকটি সূত্র অবশ্য হামলাকারী ওই ব্যক্তির মানসিক অবস্থা সম্পর্কে সন্দেহ পোষণের ইঙ্গিত দিয়েছে।

শিনজো আবে জাপানের সাম্প্রতিক সময়ের রাজনীতিতে সবচেয়ে পরিচিত ব্যক্তিত্ব। প্রায় আট বছর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি এবং ক্ষমতাসীন এলডিপির সবচেয়ে বড় উপদলের নেতৃত্ব তিনি এখনো দিচ্ছেন। ফলে আবেকে জাপানের রাজনীতিতে অনেকটা কিং মেকার হিসেবে গণ্য করা হয়।

আবের সমর্থনের কারণেই আরও দুজন প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। ফলে জাপানের সবচেয়ে প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ হিসেবে আবেকে আখ্যায়িত করা হয়।

জাপানে রোববার নির্ধারিত উচ্চকক্ষ নির্বাচনের প্রচার অভিযানকালে নেতৃস্থানীয় রাজনীতিবিদদের ব্যস্ত সময় কাটাতে হচ্ছে। জনপ্রিয় নেতা হওয়ায় অনুসারীদের নির্বাচনী প্রচারে ভাষণ দেওয়ার জন্য প্রায় প্রতিদিন আবেকে কোথাও না কোথাও ভাষণ দিতে হয়েছে। আজকের কর্মসূচিও এর ব্যতিক্রম ছিল না।

আরও পড়ুন

সকালে উড়োজাহাজে ওসাকা পৌঁছে সেখান থেকে আবে নারা শহরে যান। নারা শহরের ইয়ামাতো সাইদাইজি স্টেশনের সামনে জনতার উদ্দেশে ভাষণ শুরু করার মিনিটেরও কম সময়ের মধ্যে তিনি গুলিবিদ্ধ হন এবং তাৎক্ষণিকভাবে মাটিতে পড়ে যান।

চিকিৎসকেরা সেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসা দিচ্ছেন।