সলোমনে সরকারের সমালোচনা হয় বলে ফেসবুকই নিষিদ্ধ

ফেসবুক
ছবি : রয়টার্স

ওশেনিয়া অঞ্চলের একটি দেশ সলোমন আইল্যান্ডস। দ্বীপপুঞ্জের দেশটিতে ইদানীং সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। সেই সব সমালোচনার অধিকাংশই আবার সরকারের বিরুদ্ধে। এতেই বেঁকে বসেছে দেশটির সরকার। সমালোচনা বন্ধ করতে এখন গোটা দেশেই ফেসবুক নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা করছে দেশটি।

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি ফেসবুক সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে দেশটির সরকারের শীর্ষ মহল কাজ শুরু করেছে। চলছে পরিকল্পনা। সলোমন আইল্যান্ডসের যোগাযোগমন্ত্রী পিটার শানেল অ্যাগোভাকা জানিয়েছেন, ফেসবুক নিষিদ্ধ করার বিষয়ে খসড়া পরিকল্পনা চলতি সপ্তাহেই করা হয়ে গেছে। এখন ফেসবুক নিষিদ্ধ করার বিষয়টি কীভাবে বাস্তবায়িত হবে, সে বিষয়ে ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সরকারের আলোচনা চলছে।

সলোমন আইল্যান্ডসের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সলোমন টাইমস বলছে, এখনো সরকারের পুরো পরিকল্পনা জানা যায়নি। এ ঘটনায় দেশটির বিরোধী রাজনৈতিক দল এরই মধ্যে আপত্তি জানিয়েছে। বিরোধীরা বলছে, এই পদক্ষেপ হবে একধরনের অন্যায্য ‘সেন্সরশিপ’।

দেশটির যোগাযোগমন্ত্রী এএফপিকে বলেছেন, ‘ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রীর উদ্দেশে বাজে কথাবার্তা বলা হচ্ছে। তাদের চরিত্র হনন করা হচ্ছে, মানহানি হচ্ছে। এসবই উদ্বেগের বিষয়।’ অবশ্য ফেসবুক নিষিদ্ধ করার বিষয়ে সলোমন আইল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা ম্যাথু ওয়েল বলেছেন, ‘সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম, বিশেষ করে ফেসবুক নাগরিকদের দৃষ্টিভঙ্গি বিনিময়ের অন্যতম প্রধান মাধ্যম। এই সময়ে ফেসবুকের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া কোনোভাবেই উচিত নয়।’

সলোমন আইল্যান্ডসে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ফেসবুক অত্যন্ত জনপ্রিয়। দেশটির মোট জনসংখ্যা ৭ লাখ। অসংখ্য দ্বীপ নিয়ে দেশটি গঠিত। এসব দ্বীপে বসবাসকারী মানুষের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ফেসবুক বেশ কার্যকর।
ফেসবুক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ বিষয়ে সলোমন আইল্যান্ডসের সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চায় তারা। এক বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ফেসবুক নিষিদ্ধ করা হলে তা সলোমন আইল্যান্ডসের অধিবাসীদের মধ্যে কার্যকর যোগাযোগে বিঘ্ন ঘটাবে।

অন্যদিকে মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও এমন পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে। বৈশ্বিক করোনা মহামারির মধ্যে এমন পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার জন্য দেশটির সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।