হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থীদের গণগ্রেপ্তার

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে বহুল পরিচিত বিরোধী নেতারা রয়েছেন
ছবি: রয়টার্স

হংকংয়ে প্রায় ৫০ জন গণতন্ত্রপন্থী আইনপ্রণেতা ও কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ ওই গণতন্ত্রীপন্থীদের আজ বুধবার গ্রেপ্তার করা হয়। স্থানীয় গণমাধ্যম এ তথ্য দিয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, আজ অর্ধশতাধিক গণতন্ত্রপন্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হংকংয়ে জাতীয় নিরাপত্তা আইন কার্যকর হওয়ার পর এই আইনের অধীনে আজই সবচেয়ে বেশিসংখ্যক গণতন্ত্রপন্থীকে গ্রেপ্তার করা হলো।

আজকের গ্রেপ্তারে বিষয়ে হংকংয়ের পুলিশের কাছ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী ডেমোক্রেটিক পার্টির ফেসবুক পেজে বলা হয়েছে, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে জেমস টু, লাম চেউক টিং, লেস্টার শুমের মতো বহুল পরিচিত বিরোধী নেতা রয়েছেন।

ডেমোক্রেটিক পার্টি বলছে, আইনসভার নির্বাচনের জন্য প্রার্থী বাছাইয়ের লক্ষ্য গত বছর গণতন্ত্রপন্থীরা স্বতন্ত্রভাবে প্রাইমারি ভোটের আয়োজন করেছিল। সেই প্রাইমারিতে অংশ নেওয়ার জেরে আজ প্রায় ৫০ জন গণতন্ত্রপন্থীকে গ্রেপ্তার করল কর্তৃপক্ষ।

গত বছরের জুলাইয়ে হংকংয়ের বিরোধী দলগুলোর জোট ওই প্রাইমারির আয়োজন করেছিল।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে আইনসভার নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে সেই নির্বাচন স্থগিত করা হয়।

হংকংয়ের বিরোধীরা মনে করেন, আইনসভায় তাঁরা বেশিসংখ্যক আসন পেলে তা তাঁদের গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামের ক্ষেত্রে সুবিধা দেবে। তখন তাঁরা আইনসভায় সরকারি যেকোনো প্রস্তাবের শক্ত বিরোধিতা করতে পারবেন। পাশাপাশি গণতান্ত্রিক সংস্কারের জন্য চাপ দিতে পারবেন।

কঠোর সমালোচনা ও বিরোধিতা উপেক্ষা করে গত বছরের জুন মাসে হংকংয়ে জাতীয় নিরাপত্তা আইন কার্যকর করে চীন। আইনটি কার্যকরের পর থেকেই বিরোধীদের গ্রেপ্তার শুরু করে কর্তৃপক্ষ।

আইন অনুযায়ী, গুরুতর জাতীয় নিরাপত্তাসংক্রান্ত অপরাধ সংঘটিত হলে বিচারে অপরাধীর সর্বোচ্চ সাজা হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।

আইনে বিচ্ছিন্নতাবাদ, কেন্দ্রীয় সরকার পতন, সন্ত্রাসবাদ ও জাতীয় নিরাপত্তা বিপন্ন করতে বিদেশি বাহিনীর সঙ্গে আঁতাতমূলক যেকোনো কাজ শাস্তিমূলক অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এ ধরনের অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।

আইনটিতে হংকংয়ের আইনসভাকে পাশ কাটিয়ে যেকোনো নিরাপত্তাসংক্রান্ত পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

পশ্চিমারা ও গণতন্ত্রপন্থীরা বলে আসছেন, এই আইন হংকংয়ের স্বায়ত্তশাসন-স্বাধীনতার ঘোর বিরোধী। আইনটি হংকংয়ের স্বাধীনতাকে গুরুতর ঝুঁকিতে ফেলেছে। এই আইন আন্তর্জাতিক আইনগত বাধ্যবাধকতারও লঙ্ঘন।

হংকং চীনের আধা স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল। আগে অঞ্চলটি যুক্তরাজ্যের একটি উপনিবেশ ছিল। ১৯৯৭ সালে চুক্তির মাধ্যমে হংকংকে চীনের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সেই চুক্তিতে হংকংয়ের স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করার কথা বলা হয়।