'মিটু' লড়াইয়ে জিতলেন জাপানের সাংবাদিক

শাওরি ইতো। ছবি: এএফপি
শাওরি ইতো। ছবি: এএফপি

‘হ্যাশট্যাগ মিটু’ লড়াইয়ে জয়ী হলেন জাপানের তরুণ সাংবাদিক শাওরি ইতো। এই আন্দোলন চলার সময় সাবেক জনপ্রিয় টেলিভিশন রিপোর্টার নরিওকি ইয়ামাগুচির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনেন ইতো। এ ঘটনা ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে এবং দেশটির সব পত্রিকার সংবাদ শিরোনাম হয়।

নরিওকির বিরুদ্ধে ১ লাখ ডলারের ক্ষতিপূরণ মামলা করেন ইতো। অবশেষে এই মামলায় জিতেছেন তিনি। ইতোকে ৩০ হাজার ডলার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

৩০ বছর বয়সী ইতো জাপানে এই আন্দোলনের অন্যতম প্রতিবাদী কণ্ঠ হয়ে দাঁড়িয়েছেন।

২০১৫ সালে কর্মক্ষেত্রে সুযোগের বিষয়ে আলোচনা করতে ইতোকে একসঙ্গে রাতের খাবার খাওয়ার আমন্ত্রণ জানান ৫৩ বছর বয়সী নরিওকি। পরে তাঁকে সুযোগ পেয়ে ধর্ষণ করেন তিনি। ইতো আশঙ্কা করেন সে সময় তাঁকে মাদকজাতীয় কোনো কিছু খাওয়ানো হয়েছিল। তাঁর জ্ঞান ছিল না। জ্ঞান ফিরে নিজেকে একটি হোটেল কক্ষে আবিষ্কার করেন ইতো।

নরিওকি খুবই জনপ্রিয় টিভি রিপোর্টার। প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে।

পরে হ্যাশট্যাগ মিটু আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে মুখ খোলেন ইতো। তিনি তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ মামলা করেন।

তবে এসব অভিযোগ শুরু থেকেই অস্বীকার করে আসছেন নরিওকি। এমনকি পাল্টা ১২ লাখ ডলারের মানহানির মামলা করেন। তবে নরিওকি এবার ওই মামলায় হেরে গেলেন।

মামলায় জয়ের পর এক প্রতিক্রিয়ায় ইতো বলেন, সত্যি আমি বুঝতে পারছি না—আমার অনুভূতি কী। তা যা–ই হোক, এই মামলায় জেতার মানে এই নয় যে এমনটা কখনো হয়নি। এখানেই এর শেষ নয়। তিনি আশা করছেন, এই ঘটনার পর জাপানে এই ধর্ষণের ঘটনার হার কমে আসবে।

২০১৭ সালের এক সরকারি জরিপে দেখা গেছে যে জাপানে ধর্ষণের শিকার মাত্র ৪ শতাংশ নারী আইনি পদক্ষেপ নেন।

২০১৭ সালের অক্টোবরে বিখ্যাত প্রযোজক হার্ভে ওয়েনস্টিইনের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ তুলে ‘হ্যাশট্যাগ মিটু’ আন্দোলনের জন্ম হয়। এরপর সারা বিশ্বের নারীরা মুখ খোলেন। তাঁদের ওপর ঘটে যাওয়া যৌন নির্যাতনের কথা প্রকাশ্যে আনেন তাঁরা। এই আন্দোলন ঝড় তোলে। বেরিয়ে আসে মুখোশধারী অনেক মানুষের আসল রূপ।