চীন–তাইওয়ান উত্তেজনা চরমে

তাইওয়ানের আকাশে চীনের যুদ্ধজাহাজের মহড়া
ছবি : এএফপি

তাইওয়ানের ভবিষ্যৎ চীনের সঙ্গে পুনর্মিলনের মধ্যেই নিহিত রয়েছে বলে জানিয়েছে চীনের সেনাবাহিনী। বিষয়টি সম্পর্কে তাইওয়ানকে স্পষ্টভাবে সচেতন থাকতেও বলেছে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভর না করতেও হুঁশিয়ার করা হয়েছে। গত সপ্তাহে তাইওয়ানের আকাশে চীনের যুদ্ধবিমানের রেকর্ড মহড়া নিয়ে প্রশ্নের জবাবে গতকাল বৃহস্পতিবার চীনের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এ কথা বলা হয়। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

এদিকে, তাইওয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোসেফ ইয়ো মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনকে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘চীনের সঙ্গে সম্ভাব্য সামরিক সংঘাতের জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।’

গত বুধবার তাইপেতে সিএনএনকে ইয়ো বলেন, ‘তাইওয়েনের সিদ্ধান্তগ্রহীতা হিসেবে আমরা কোনো সুযোগ নিতে পারি না। আমেদের প্রস্তুত থাকতে হবে। চীন সরকার বলছে, তারা শক্তি প্রয়োগ ত্যাগ করবে না, তাইওয়ান ঘিরে তারা সামরিক মহড়া চালাচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি, এটাই প্রকৃত অবস্থা।’ এর আগে গত মে মাসে তিনি বলেছিলেন, ‘চীন যদি আক্রমণ করে বসে, তবে শেষ দিন পর্যন্ত লড়াই করে যাবে তাইওয়ান।

গত মঙ্গলবার ২৮টি চীনা যুদ্ধবিমান তাইওয়ানের আকাশসীমায় ঢুকে পড়ে। এসব যুদ্ধবিমানের মধ্যে ফাইটার ও পারমাণবিক বোমা বহনে সক্ষম বোমারু বিমানও রয়েছে। তাইওয়ানকে বিচ্ছিন্ন প্রদেশ বলে মনে করে চীন। তবে তাইওয়ান নিজেদের সার্বভৌম রাষ্ট্র বলে দাবি করে। তাইওয়ান প্রণালির শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য চীনকে সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে আখ্যায়িত করেন ন্যাটো নেতারা। এরপরই তাইওয়ানের আকাশে বিমান পাঠানোর এই ঘটনা ঘটে।

গত সপ্তাহের ওই যুদ্ধবিমান পাঠানোর বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রেন গুয়োকিয়াং বলেন, ‘জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতির জন্য ওই মহড়া প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ছিল।’

রেন আরও বলেন, ‘তাইওয়ানের স্বাধীনতা মানেই যুদ্ধ। যুক্তরাষ্ট্রকে পুরোপুরি বুঝতে হবে যে চীনের উন্নয়ন ও বৃদ্ধি কোনো শক্তি দ্বারা থামানো যাবে না।’

তাইওয়ানের ক্ষমতাসীন দলের দিকে ইঙ্গিত করে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আরও বলেন, ‘ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই সচেতন হতে হবে যে তাইওয়ানের ভবিষ্যৎ জাতীয় পুনর্মিলনের ওপর নির্ভর করছে। স্বাধীনতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভর করার যেকোনো প্রয়াস ব্যর্থতায় পরিণত হবে।’

চীন মনে করছে, তাইওয়ানের নির্বাচিত সরকার দ্বীপটিকে আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতা ঘোষণার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তবে, তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং ওয়েন অঞ্চলটিকে ইতিমধ্যে স্বাধীন বলে বর্ণনা করে আসছেন। অধিকাংশ তাইওয়ানবাসী চীনের অধীনে থাকার আগ্রহ দেখান না। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তাইওয়ানকে সমর্থন দিয়ে ও অস্ত্র সরবরাহ করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে চীনের বিরাগভাজন হওয়ার ভয়ে তাইওয়ানকে কূটনৈতিক স্বীকৃতি দেওয়া দেশ কম। তাইওয়ানের পক্ষ থেকে গত বছর থেকেই তাদের আকাশসীমায় চীনা যুদ্ধবিমানের অনুপ্রবেশ নিয়ে অভিযোগ করা হচ্ছে।