চীনা বিমানবহরকে সতর্ক করতে জঙ্গি বিমান পাঠাল তাইওয়ান
তাইওয়ানের আকাশসীমায় প্রবেশ করা চীনের ২৯টি যুদ্ধবিমানের একটি বহরকে সতর্ক করতে জঙ্গি বিমান উড়িয়েছে দেশটি। চীনের এই বিমানবহরে বোম্বারও ছিল। দ্বীপটির দক্ষিণ দিক দিয়ে যুদ্ধবিমানের বহরটি প্রশান্ত মহাসাগরের দিকে উড়ে যায়। খবর আল-জাজিরার।
গতকাল মঙ্গলবার চীনের এই যুদ্ধবিমান বহরের অনুপ্রবেশের অভিযোগ ওঠে। তাইপেই ও বেইজিংয়ের মধ্যে চলমান উত্তেজনার সর্বশেষ ঘটনা এটি। মে মাসের পর এটি তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা অঞ্চলে চীনের সবচেয়ে বড় বিমানবহরের অনুপ্রবেশের ঘটনা।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, চীনের সর্বশেষ এই বিমানবহরে ছিল ১৭টি জঙ্গি বিমান ও ৬টি এইচ-৬ বোম্বার। এ ছাড়া ছিল ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার, পূর্বসতর্কতা, সাবমেরিন-বিরোধী এবং আকাশে জ্বালানি সরবরাহকারী একটি উড়োজাহাজ।
মন্ত্রণালয় আরও জানায়, চীনের উড়োজাহাজগুলোকে সতর্ক করতে জঙ্গি বিমান পাঠায় তাইওয়ান। উড়োজাহাজগুলোর গতিপথ নজরদারিতে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা মোতায়েন করা হয়। জবাব দেওয়ার ক্ষেত্রে মার্জিত ভাষা ব্যবহার করা হয়।
স্বশাসিত দ্বীপ তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করে থাকে চীন। তাইওয়ানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় আকাশ প্রতিরক্ষা চিহ্নিতকরণ অঞ্চলে (এডিআইজেড) চীনের বিমানবাহিনীর একের পর এক মিশন পরিচালনার অভিযোগ করে আসছে তাইপেই। অঞ্চলটি তাইওয়ান নিয়ন্ত্রিত প্রতাস দ্বীপপুঞ্জের কাছে।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দেওয়া একটি মানচিত্র অনুযায়ী, চীনা বহরের কিছু উড়োজাহাজ প্রতাস দ্বীপপুঞ্জের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ওপর দিয়ে উড়ে যায়। একটি ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার ও একটি গোয়েন্দা উড়োজাহাজকে সঙ্গী করে বাশি চ্যানেলের দিকে উড়ে যায় বোম্বারগুলো। চ্যানেলটি তাইওয়ানকে ফিলিপাইন থেকে আলাদা করেছে। এরপর প্রশান্ত মহাসাগর হয়ে বহরটি চীনে ফিরে আসে।
গত ৩০ মে’র পর এটি ছিল তাইওয়ানের এডিআইজেডে চীনের সবচেয়ে বড় যুদ্ধবিমানবহরের অনুপ্রবেশ। ওই দিন ৩০টি বিমানের একটি বহর এডিআইজেডে প্রবেশ করছিল। চলতি বছরের সবচেয়ে বড় অনুপ্রবেশের ঘটনাটি ঘটে জানুয়ারি মাসে। ওই বহরে উড়োজাহাজের সংখ্যা ছিল ৩৯।
চীন সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নিজেদের অসন্তোষের বিষয়টি জানাতে তাইওয়ানের আকাশসীমায় যুদ্ধবিমানের বড় বহর পাঠাচ্ছে। এভাবে তাইপের পুরোনো যুদ্ধবিমানবহরকে নিয়মিতই চাপে রাখছে বেইজিং। একই সঙ্গে একে তাইওয়ানের ‘ধৈর্য পরীক্ষা’ ও দেশটির বাহিনীকে ‘হতোদ্যম করে দেওয়ার’ প্রচেষ্টা বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।