সীমানায় ঢুকে পড়া চীনা উড়োজাহাজের সংখ্যা জানাল তাইওয়ান

চীনের সেনাবাহিনী গত বৃহস্পতিবার সকালে তাইওয়ানের চারপাশে নৌবাহিনীর জাহাজ ও সামরিক উড়োজাহাজ নিয়ে মহড়া দেওয়া শুরু করেএএফপি ফাইল ছবি

স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল তাইওয়ান ঘিরে চীনের দুই দিনের মহড়া গতকাল শুক্রবার শেষ হয়েছে। মহড়ায় ছিল বোমারু বিমান ও যুদ্ধজাহাজ।

এদিকে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তাইওয়ান প্রণালিতে গতকাল কতগুলো চীনা যুদ্ধজাহাজ ও যুদ্ধবিমান অংশ নিয়েছিল, সে সংখ্যা আজ শনিবার প্রকাশ করেছে। তাদের দাবি, এদিন ৪৬টি যুদ্ধবিমান মধ্যরেখা অতিক্রম করেছে।

গতকাল রাতে চীনের সামরিক চ্যানেলের খবরে বলা হয়, মহড়া শেষ হয়েছে। চীনা সেনাবাহিনীর মুখপত্র পিপলস লিবারেশন আর্মি ডেইলির এক মন্তব্য প্রতিবেদনে বলা হয়, পূর্বঘোষণা অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবার থেকে গতকাল পর্যন্ত দুই দিন স্থায়ী ছিল এ মহড়া।

এ ব্যাপারে আজ চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিল রয়টার্স। তবে ফোন করে সাড়া পাওয়া যায়নি।

আজ তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, মহড়ার দ্বিতীয় দিন শুক্রবার ৪৬টি চীনা সামরিক উড়োজাহাজ তাইওয়ান প্রণালির মধ্যরেখা অতিক্রম করেছে। এটিকে চীন ও তাইওয়ানের মধ্যে বিভক্তকারী অনানুষ্ঠানিক রেখা হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। তাইওয়ান বলেছে, সব মিলে ৬২টি চীনা যুদ্ধজাহাজ ও চীনা নৌবাহিনীর ২৭টি জাহাজ শনাক্ত করেছে তারা।

মন্ত্রণালয়টির তথ্য অনুসারে যেসব যুদ্ধজাহাজ মহড়ায় অংশ নিয়েছিল, তার মধ্যে আছে-এসইউ-৩০ যুদ্ধবিমান, পারমাণবিক সক্ষমতাসম্পন্ন এইচ-৬ বোমারু বিমান। তাইওয়ান প্রণালিতে যেমন মহড়া চলেছে, তেমনি ফিলিপাইন থেকে তাইওয়ানকে বিভক্তকারী বাশি চ্যানেলেও মহড়া চলেছে।

স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ড হিসেবে দাবি করে  চীন। তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে লাই চিং তে শপথ নেওয়ার তিন দিন পর বৃহস্পতিবার তাইওয়ান ঘিরে ‘জয়েন্ট সোর্ড-২০২৪এ’ মহড়া শুরু করে চীন। লাই চিং তে-কে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ আখ্যা দিয়েছে দেশটি।

বেইজিং বলেছে, গত সোমবার তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর প্রথম ভাষণে লাই যে কথা বলেছেন, তার ‘শাস্তি’ হিসেবে এ মহড়া চালিয়েছে তারা। ভাষণে লাই বলেছিলেন, তাইওয়ান প্রণালির দুই পক্ষের কেউই কারও অধীনস্থ নয়। বেইজিং মনে করে, এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে লাই চীন ও তাইওয়ানকে আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করেছে।

আরও পড়ুন

লাই বারবারই চীনের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দিয়ে প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন। তিনি বলেছেন, তাইওয়ানের ভবিষ্যতের ব্যাপারে শুধু সেখানকার জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে। বেইজিংয়ের সার্বভৌমত্বের দাবিও প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি। তাইওয়ান সরকার এ মহড়ার নিন্দা জানিয়েছে। বলেছে, চীনের চাপে তারা ভীত হবে না।

চার বছর ধরে নিয়মিতই তাইওয়ান ঘিরে সামরিক তৎপরতা চালাচ্ছে চীন। ২০২২ ও ২০২৩ সালে তাইওয়ান প্রণালিতে বড় আকারের যুদ্ধ যুদ্ধ খেলায় মেতেছিল দেশটি।