সার্স ভাইরাসের তথ্য ফাঁসকারী চীনা চিকিৎসকের মৃত্যু

চিকিৎসক জিয়াং ইয়ানইয়ং
ফাইল ছবি রয়টার্স

চীনের যে চিকিৎসক সার্স মহামারি নিয়ে চীনের রাখঢাক প্রকাশ করে দিয়েছিলেন, সেই চিকিৎসক জিয়াং ইয়ানইয়ং মারা গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। আজ বুধবার তাঁর পরিবার মৃত্যুর তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছে।

২০০৩ সালে, জিয়াং তখন বেইজিংয়ে সামরিক হাসপাতালে কাজ করতেন। সে সময় সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোমের (সার্স) মহামারির প্রাদুর্ভাবকে কমিয়ে দেখাতে চীনের প্রচেষ্টাকে তিনি বিশ্বের কাছে তুলে ধরেছিলেন। এর ফলে গোপন করা এমন হাজার হাজার সার্স রোগীর তথ্য তখন বেরিয়ে আসে।

জিয়াংয়ের ছেলের বউ কুই হং বলেছেন, আজ সকালেই তাঁর (জিয়াং) অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। তবে তাঁর সেখানে উপস্থিত থাকার ‘অনুমতি ছিল না’। বলা হচ্ছে, জিয়াং গত শনিবার মারা গেছেন।

সার্সের সংক্রমণে বিশ্বব্যাপী আট শতাধিক মানুষ মারা গিয়েছিল। চীনের দক্ষিণাঞ্চলে এই রোগ প্রথম ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে ধামাচাপা দেওয়ায় চীনকে আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল।

১৯৮৯ সালে ছাত্রদের নেতৃত্বাধীন গণতান্ত্রিক বিক্ষোভে সামরিক বাহিনী ব্যাপক দমন–পীড়ন ও ধরপাকড় চালায়। এমনকি হাজারো বিক্ষোভকারীকে হত্যা করা হয়। তিয়ানানমেন স্কয়ারে দাঁড়িয়ে প্রকাশ্যে এর নিন্দা জানিয়েছিলেন জিয়াং। এরপর জিয়াংকে গৃববন্দী করা হয়েছিল। আট মাস তিনি এ অবস্থায় কাটিয়েছেন।

চাইনিজ কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য জিয়াং ২০০৪ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়াবাওকে একটি চিঠি পাঠিয়ে ঘটনার আনুষ্ঠানিক পুনর্মূল্যায়ন করার আহ্বান জানান।

জিয়াং জীবনের শেষ ভাগে অনেক বিধিনিষেধের মুখোমুখি হয়েছিলেন। ২০০৭ সালে মানবাধিকার পুরস্কার গ্রহণের জন্য তাঁকে যুক্তরাষ্ট্র যেতে বাধা দেওয়া হয়েছিল।

এই চিকিৎসকের মৃত্যু নিয়ে চীনের মূল ভূখণ্ডের গণমাধ্যমে কোনো খবর আসেনি। যদিও জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে কয়েকজন তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পোস্ট করেছেন। একজন উইবো ব্যবহারকারী লিখেছেন, তিনি একজন চিকিৎসক, তিনি সত্য বলার সাহস করেছিলেন।

এখনো চীনে দুর্যোগ ও জনস্বাস্থ্যসম্পর্কিত তথ্য কর্তৃত্ববাদী সরকার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে।