কংক্রিটের আংটিতে বাগদান
প্রেমের টানে এক হয়েছেন। একসঙ্গে কাটাতে চান বাকিটা জীবন। সে ভাবনা থেকেই প্রেমিকার সঙ্গে বাগদানটা সেরে নিয়েছিলেন ইয়াও গোউইউ। ভালোবাসার মানুষটির অনামিকায় পরিয়ে দিয়েছিলেন আংটি। তবে সোনা বা হীরার নয়, ইয়াও যে আংটি বেছে নিয়েছিলেন, সেটি ছিল কংক্রিটের তৈরি।
ইয়াও চীনের বাসিন্দা। তিনি একজন প্রকৌশলী। নিজ দেশে বেশ নামডাক রয়েছে তাঁর। পড়াশোনা করেছেন সিনহুয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। সেখানে পড়াশোনার সময় বিশেষ এক উপাদান আবিষ্কার করেন তিনি। সেটির ব্যবহারে কংক্রিটের জীবনকাল বেড়ে যায়, হয় আরও বেশি জলনিরোধক। চীনে বিভিন্ন নির্মাণকাজে ব্যবহার করা হচ্ছে এই কংক্রিট।
নিজের আবিষ্কার করা ওই উপাদানের তৈরি কংক্রিট দিয়েই বাগদানটা সেরেছিলেন ইয়াও। সেটি ২০১৬ সালের ঘটনা। আবিষ্কারের জন্য সিনহুয়া কুইহ্যাং স্কলারশিপ গোল্ড অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয় তাঁকে। ওই অনুষ্ঠানেই বাগদানের কাজটা সারেন ইয়াও। তিনি বলেন, ‘আমাদের ভালোবাসা যে শত বছরেও ক্ষয়ে যাবে না বা কমবে না, তা বোঝাতেই এই আংটি দিয়েছি আমি।’
বাগদানের পর প্রেমিকার সঙ্গে ইয়াওয়ের বিয়ে হয়েছিল। বর্তমানে তাঁরা সংসার করছেন। তবে আট বছর আগের সেই বাগদানের ঘটনা এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। গণমাধ্যমের সংবাদ শিরোনামও হচ্ছেন তাঁরা। ইয়াওয়ের ওই বিচিত্র বাগদান নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খোশগল্পও কম হচ্ছে না।
চীনে অনেকেই এই বাগদানকে ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে তকমা দিচ্ছেন। অনেকে আবার একে দেখছেন ‘সস্তা’ কাজ হিসেবে। ইয়াও একটি নামও পেয়েছেন; ‘সিমেন্ট ভাই’। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একজন লিখেছেন, ইয়াওয়ের করা আবিষ্কার জলাধার ও সেতুগুলো টিকিয়ে রাখতে পারে। আর কংক্রিটের আংটি দিয়ে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন যে প্রেমিকাকে নিয়ে সারা জীবন একসঙ্গে থাকার প্রতিশ্রুতিও কংক্রিটের মতোই শক্তিশালী। তাঁর এই ভালোবাসা সোনা বা রুপার আংটির চেয়ে সুন্দর। তবে আরেক নারী প্রশ্ন করেছেন, ‘আংটিটা কি তাঁর ভালোবাসার প্রমাণ, নাকি নিজের সফলতার?’