বিয়ের হার বেড়েছে চীনে

বেইজিংয়ের একটি স্টুডিওতে বিয়ের ছবি তোলার জন্য প্রস্তুত এক চীনা দম্পতি
ছবি: রয়টার্স

গত এক দশক চীনে বিয়ে করার হার কমছিল। তরুণদের মধ্যে বিয়ে করার প্রবণতাও ছিল নিম্নমুখী। কিন্তু গত বছর দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। গত সপ্তাহে দেশটির নাগরিকবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সুখবর দেওয়া হয়।

মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এক বছর আগের তুলনায় ২০২৩ সালে চীনের বিয়ের হার ১২ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে। করোনা মহামারির কারণে দেশটিতে অনেকেই বিয়ের সময় পিছিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু করোনা মহামারির প্রকোপ কাটতেই তরুণদের মধ্যে বিয়ে করার হার বাড়তে দেখা গেছে।

মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর চীনে ৭৬ লাখ ৮০ হাজার বিয়ে হয়েছে, যা ২০২২ সালের তুলনায় ৮ লাখ ৪৫ হাজার বেশি। দেশটিতে এর আগে ২০১৩ সালে ১ কোটি ৩৪ লাখ ৭০ হাজার বিয়ের সংখ্যা রেকর্ড করা হয়েছিল।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং সম্প্রতি সন্তানবান্ধব সমাজ বিনির্মাণের ঘোষণা দেন। এ ছাড়া দেশটিতে দীর্ঘ মেয়াদে ভারসাম্যপূর্ণ জনসংখ্যা রাখার পরিকল্পনার কথা জানান। একই সঙ্গে শিশু জন্ম, লালনপালন ও শিক্ষার জন্য খরচ কমানোর কথা বলেন।

চীনে দীর্ঘদিন ধরে তরুণদের মধ্যে বিয়ের আগ্রহ কমে যাওয়া নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। দেশটির বয়স্ক মানুষ বেড়ে যাওয়ায় সরকারের পক্ষ থেকে শিশু জন্মহার বাড়াতে নানা সুবিধার কথা জানানো হয়। আগামী দশক নাগাদ দেশটিতে ৩০ কোটি মানুষ অবসরে যাওয়ার বয়সে পৌঁছাবেন।

গত বছর চীনের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার টানা দ্বিতীয় বছরের মতো কমতে দেখা যায়। শিশু জন্মহার কমে যাওয়া ও করোনা মহামারিতে অনেক মানুষের মৃত্যুতে দেশটির জনসংখ্যা কমতে দেখা গেছে। কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, এই নেতিবাচক ধারা চলতে থাকলে দীর্ঘ মেয়াদে তা দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলবে।

জন্মহারের সঙ্গে বিয়ের হারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। এখন বিয়ের হার বাড়তে শুরু করায় দেশটির নীতিনির্ধারকেরা খুশি। তাঁরা আশা করছেন, এ বছর জনসংখ্যা কমে যাওয়ার হার থেকে তাঁরা বেরিয়ে আসতে পারবেন।

তবে বিয়ে নিয়ে এই সুখবর থাকলেও অনেক তরুণ এখনো একা জীবন কাটাতেই আগ্রহী। এর পেছনে রয়েছে চাকরি পাওয়ার অনিশ্চয়তা, তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার ও দেশটির অর্থনীতি নিয়ে তরুণদের মধ্যে আস্থার ঘাটতির মতো বিষয়গুলো।