রাশিয়া সফরে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই
ছবি: রয়টার্স

নিরাপত্তার বিষয়ে আলোচনা করতে রাশিয়া সফর করছেন চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ওয়াং ই। উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং–উনের সঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠকের পরপরই চীনের এ শীর্ষ কূটনীতিক মস্কো সফরে গেলেন। ওয়াং ই আজ সোমবার মস্কোর উদ্দেশে রওনা হন।

রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ঘনিষ্ঠ মিত্র চীনের সমর্থন চেয়ে যাচ্ছে রাশিয়া। তবে চীন সরাসরি সমর্থন না করলেও রাশিয়াকে পরোক্ষভাবে সমর্থন করে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে চীন এটি অস্বীকার করেছে।

রাশিয়ার গণমাধ্যমগুলো বলছে, চীনের শীর্ষ কূটনীতিকের এ সফর পুতিনের আসন্ন যুগান্তকারী বেইজিং সফরের ভিত্তি তৈরি করবে।

চলতি মাসের শুরুর দিকে পুতিন বলেছিলেন, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হতে পারে। তবে কবে সে বৈঠক হবে, তা তিনি বলেননি।

ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গত মার্চে পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি), এরপর তিনি আর দেশের বাইরে পা দেননি। পুতিন সর্বশেষ বিদেশি সফর হিসেবে গত বছরের ডিসেম্বরে বেলারুশ ও কিরগিজস্তান সফর করেন।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, ‘কৌশলগত নিরপত্তাবিষয়ক আলোচনা’ করতে ওয়াং চার দিনের সফরে রাশিয়ায় গেছেন।

রাশিয়ার বার্তা সংস্থা তাস জানায়, ক্রেমলিন জানিয়েছে, ওয়াং রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সেখানে মূল আলোচ্য বিষয়গুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে থাকবে ইউক্রেন যুদ্ধ।

এ ছাড়া এশিয়া–প্যাসিফিক অঞ্চলে ন্যাটো বাহিনীর ‘সম্প্রসারণ ও অবকাঠামো’ বিষয়ে আলোচনা হবে। পাশাপাশি জাতিসংঘের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোতে তাদের সমন্বয় জোরদার করা হবে।

কিম জং–উনের সঙ্গে পুতিনের বেশ আলোচিত বৈঠকের কয়েক দিনের মধ্যেই ওয়াং ই মস্কো সফরে গেলেন। কিম যখন রাশিয়া সফর করেন, তখন এ নিয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মন্তব্য করা থেকে বিরত ছিল। শুধু বলেছিল, এটি দুই দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়।

কিছু কিছু বিশ্লেষক মনে করেন, চীনের জ্ঞাতসারে বা পরোক্ষ সমর্থন নিয়েই এটা হয়েছে। তা ছাড়া দুই দেশের সঙ্গেই রয়েছে চীনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক।

অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথওয়েলস অব ইউনির্ভাসিটির চীন–রাশিয়া সম্পর্কবিষয়ক বিশেষজ্ঞ আলেক্সান্দার কোরোলেভ বলেন, ‘রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে যা হয়েছে, তা চীনের সম্মতি ছাড়া হতে পারে না...আমার মনে হয় না, বেইজিংয়ের সম্মতি ছাড়া দুই দেশ নিজেদের মধ্যে সামরিক সহযোগিতার বিষয়ে একমত হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে সরাসরি সাহায্য না করে উত্তর কোরিয়ার মাধ্যমে করতে পারে চীন।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পক্ষ থেকে বিবৃতিতে জানানো হয়, রাশিয়া সফরের আগের দিন ওয়াং ই মাল্টায় যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। আলোচনায় দুই দেশের সম্পর্কের পাশাপাশি আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গ নিয়েও আলোচনা করেছেন।