অভ্যুত্থান-গ্রেপ্তারের গুজবের মধ্যেই জনসমক্ষে সি

চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং
ফাইল ছবি: রয়টার্স

চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং গতকাল মঙ্গলবার বেইজিংয়ে একটি প্রদর্শনী পরিদর্শন করেছেন। চীনের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এ কথা জানিয়েছে। সেপ্টেম্বরে মাঝামাঝি মধ্য এশিয়া সফর শেষে চীনে ফেরার পর এই প্রথম জনসমক্ষে এলেন তিনি। গৃহবন্দী হয়েছেন বলে ছড়িয়ে পড়া অসমর্থিত গুজবের মধ্যেই সি প্রকাশ্যে এলেন। খবর আল-জাজিরার। 

উজবেকিস্তানে অনুষ্ঠিত সম্মেলন থেকে দেশে ফেরার পর জনসমক্ষে আসেননি চীনের প্রেসিডেন্ট। এতে বেইজিংয়ে সামরিক অভ্যুত্থানের অসমর্থিত গুজব ছড়িয়ে পড়ে। 

পতনোন্মুখ অর্থনীতি, করোনাভাইরাস মহামারি এবং বিরল বিক্ষোভের পাশাপাশি তাইওয়ান ইস্যুতে পশ্চিমাদের সঙ্গে তিক্ততা সত্ত্বেও তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা নিশ্চিত করতে যাচ্ছেন সি। আসছে বছরগুলোয় ‘চীনা জাতির পুনরুজ্জীবনের জন্য’ নিজের মহান লক্ষ্য বাস্তবায়নে ক্ষমতায় থাকতে চান তিনি।

এক দশক আগে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিসিপি) সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেওয়ার পর সি অবিচলভাবে ক্ষমতা পোক্ত করেছেন এবং ভিন্নমত ও বিরোধিতার সুযোগ বন্ধ করে দিয়েছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধপরবর্তী মার্কিন নেতৃত্বাধীন বিশ্বব্যবস্থায় বিকল্প নেতা হিসেবে চীন বৈশ্বিক মঞ্চে নিজের অবস্থান অনেক বেশি পোক্ত করেছে। 

সি ২০১৮ সালে সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্ট থাকার বিধিনিষেধ তুলে দেন। তখনই বিষয়টি ঠিক হয়ে যায় যে তিনি তৃতীয় মেয়াদে পাঁচ বছর কিংবা আরও বেশি সময় ক্ষমতায় থাকতে যাচ্ছেন। 

সির দশকব্যাপী শাসনে দলের মধ্যেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে দমনপীড়ন চালানো হয়; যদিও বিশ্লেষকেরা বলছেন, রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের দমাতে এসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তাঁর আমলে হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলন গুঁড়িয়ে দিতে একের পর এক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কোভিড-১৯ সংক্রমণ ঠেকাতে শহরগুলোয় কঠোর লকডাউন আরোপ করা হয়।

উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াং প্রদেশে নিপীড়নমূলক নীতির জন্যও মানবাধিকার ইস্যুতে আন্তর্জাতিক মহলে তীব্রভাবে সমালোচিত সি। সেখানকার প্রায় ১০ লাখ উইঘুরসহ অন্য মুসলিম সংখ্যালঘুদের কথিত সন্ত্রাসবাদ দমনের কথা বলে আটকে রাখা হয়েছে। 

আগামী ১৬ অক্টোবর চীনা কমিউনিস্ট পার্টির পঞ্চবার্ষিক সম্মেলন। এই সভায় তিনি তৃতীয় মেয়াদে দলের নেতৃত্বে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করতে যাচ্ছেন বলেই ব্যাপকভাবে মনে করা হচ্ছে। সম্মেলনকে সামনে রেখে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ধরপাকড় চলছে। 

আরও পড়ুন

জননিরাপত্তাবিষয়ক সাবেক ভাইস মিনিস্টার সান লিজুন, সাবেক বিচারমন্ত্রী ফু ঝেংহুয়া এবং সাংহাইয়ের সাবেক দুই পুলিশপ্রধান চোংকিং ও শানজিকে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের এই গ্রেপ্তারের ঘটনা চীনে গত কয়েক বছরে মধ্যে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দমন অভিযান হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। 

গত রোববার ২ হাজার ৩০০ সদস্যের চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রতিনিধিদের নাম ঘোষণা করে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। তালিকায় সির নাম থাকায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বেইজিংয়ের সামরিক অভ্যুত্থানের গুজব আরেক দফা নাকচ হয়ে যায়। সূত্রবিহীন সামরিক যানের ভিডিও ও উড়োজাহাজের যাত্রা বাতিলের কথা বলে এ গুজব ছড়ানো হয়।

আরও পড়ুন