চীনের সেই জাহাজ মালদ্বীপ উপকূলে ভেড়ার পথে
গবেষণার কাজে নিয়োজিত চীনের সেই জাহাজ আজ বৃহস্পতিবার মালদ্বীপ উপকূলে ভিড়তে পারে। বিশ্বজুড়ে জাহাজ চলাচলের বিষয়ে পাওয়া তথ্য–উপাত্তে দেখা গেছে, একই রকমের একটি জাহাজ ভারত মহাসাগর সফর করার মাত্র তিন মাস পর চীনা জাহাজটি মালদ্বীপে ভিড়ছে।
মালদ্বীপের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে টানাপোড়েন চলার মধ্যে এ ঘটনায় নয়াদিল্লিতে নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
গত জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বলেছিল, চীন এ অঞ্চলে তার নৌশক্তি মোতায়েনের লক্ষ্যে চলতি মিশন থেকে পাওয়া তথ্য কাজে লাগাতে পারে। তবে বেইজিং এ দাবি উড়িয়ে দিয়েছে।
‘জিয়ান ইয়াং হং ০৩’ চীনের প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মালিকানাধীন জাহাজ। সমুদ্রে জাহাজ চলাচলবিষয়ক তথ্য সরবরাহকারী ওয়েবসাইট ‘মেরিনট্রাফিক’–এর তথ্য অনুযায়ী, চীনের দক্ষিণ–পূর্বাঞ্চলীয় বন্দর ছেড়ে আসার এক মাসের বেশি সময় পর জাহাজটি এখন মালদ্বীপ উপকূলে নোঙর করার জন্য রাজধানী মালের সবুজসংকেতের অপেক্ষায় আছে।
গত জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বলেছিল, চীন এ অঞ্চলে তার নৌশক্তি মোতায়েনের লক্ষ্যে চলতি মিশন থেকে পাওয়া তথ্য কাজে লাগাতে পারে। তবে বেইজিং এ দাবি উড়িয়ে দিয়েছে।
ভারত, মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কার বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের ঠিক বাইরে সামুদ্রিক জলসীমায় চীনের এ বেসামরিক জাহাজ তিন সপ্তাহের বেশি জরিপকাজে কাটিয়েছে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, জাহাজটির এ গবেষণাকাজ একান্তই বৈজ্ঞানিক বোঝাপড়ার সুবিধা আদায়ের শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারত মহাসাগরে চীনের গবেষণাকাজে নিয়োজিত জাহাজের উপস্থিতিতে উদ্বেগ জানিয়ে আসছে নয়াদিল্লি। যদিও এসব জাহাজ চীনের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত নয়।
ভারতের একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা আগে বলেছিলেন, এসব জাহাজের ‘দ্বিমুখী ব্যবহারের’ উদ্দেশ্য রয়েছে। যার অর্থ, এগুলোর মাধ্যমে পাওয়া তথ্য–উপাত্ত সামরিক ও বেসামরিক উভয় উদ্দেশ্যে কাজে লাগানো হতে পারে।
ভারত মহাসাগরে ‘জিয়ান ইয়াং হং ০৩’ জাহাজের বেশ কয়েকবার উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। ২০২১ সালে এটি ইন্দোনেশিয়ার সুন্দা প্রণালি অতিক্রম করেছিল। এ ঘটনায় দেশটির কর্তৃপক্ষের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দেয়। তখন কর্তৃপক্ষ বলেছিল, ওই সময় তারা তিন দফায় নিজেদের শনাক্তকরণ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেয়।
গবেষণায় নিয়োজিত চীনের নৌযানগুলো শ্রীলঙ্কা উপকূলের কাছাকাছিও থেমেছে। ২০২২ সালে ‘ইউয়ান ওয়াং ৫’ নামের একটি চীনা সামরিক নৌযান কলম্বোর কাছে ভিড়লে ভারতে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়। নৌযানটি রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্রের উৎক্ষেপণ শনাক্তকরণে সক্ষম।
সর্বশেষ গত বছরের অক্টোবরে চীনের একটি গবেষণা নৌযান শ্রীলঙ্কা উপকূলে নোঙর করে। এতে ভারতের উদ্বেগ আবারও বেড়ে যায়।
‘জিয়ান ইয়ং হং ০৩’ এমন একসময় মালদ্বীপ উপকূলে ভিড়ছে, যখন গত মাসে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জু চীন সফর করেন। এ সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরাল হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বেইজিং দেশটিকে প্রায় ১৩ কোটি ডলারের ঋণমুক্ত সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে।
মালদ্বীপ বলেছে, চীনের জাহাজটি তাদের জলসীমায় কোনো গবেষণা চালাবে না। কর্মীদের রদবদল ও নতুনভাবে সরবরাহের কাজ করতেই শুধু থামবে এটি।