বিরোধ নিরসনে সরাসরি আলোচনা চান ইয়েলেন

চীনের উপপ্রধানমন্ত্রী হি লাইফেংয়ের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন (বাঁয়ে)। আজ শনিবার বেইজিংয়ে একটি রাষ্ট্রীয় অতিথিশালায়
ছবি: এএফপি

চীন সফররত মার্কিন অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন বলেছেন, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে যেসব উদ্বেগ আছে, তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সরাসরি আলোচনা করা উচিত। বৈরিতা থাকলেও দুই বৃহত্তম অর্থনীতির দেশের মধ্যে সহযোগিতার সম্পর্ক জোরদারের আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।

চীনের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ সম্পর্কের উন্নয়নের লক্ষ্যে বেইজিং সফর করছেন ইয়েলেন। সফরের তৃতীয় দিন আজ শনিবার চীনের উপপ্রধানমন্ত্রী হি লাইফেংয়ের সঙ্গে বৈঠকে গত বছর যুক্তরাষ্ট্র–চীন রেকর্ড বাণিজ্যের উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটাই দুই দেশের যুক্ততার প্রমাণ দিচ্ছে।

হি লাইফেংকে মার্কিন অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বাণিজ্য ও বিনিয়োগে যুক্ততার ক্ষেত্রে আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য অবারিত সুযোগ আছে। বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের নির্দিষ্ট উদ্বেগ নিয়ে সমঝোতার জন্য আমাদের সরাসরি যোগাযোগ করা উচিত এবং আমরা যোগাযোগ করব।’

হি লাইফেং বলেন, গত বছরের নভেম্বরে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মধ্যে বৈঠকের পর চীন–যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা শুরু হয়। কিন্তু ‘অপ্রত্যাশিত কিছু ঘটনা’ এতে বাধা তৈরি করে। বিষয়টি নিয়ে বেইজিং অনুতপ্ত বলে জানান তিনি।

গতকাল শুক্রবার চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন ইয়েলেন। উপপ্রধানমন্ত্রী হি ইয়েলেনকে বলেছেন, ‘আপনি ও প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং বৈঠকে যেসব বিষয় নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন, সে বিষয়গুলো আন্তরিকভাবে বাস্তবায়নে এবং এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেবে বেইজিং।’

চীন সফরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত মার্কিন অর্থমন্ত্রী কোন কোন বিষয়ে দুই দেশের কাজ করা উচিত, সেসব বিষয়কে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করছেন। চীনের কারণে অর্থনৈতিক ঝুঁকি মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র যে অবস্থান নিয়েছে, তার পক্ষেও কথা বলছেন। ইয়েলেন বলেছেন, চীনের ‘অসাধু বাণিজ্যচর্চার’ বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্ররা নিজেদের নেওয়া অবস্থানে অটল থাকবে।

জলবায়ু অর্থায়নে জোর

বেইজিংয়ে একদল বিশেষজ্ঞের সঙ্গে গোলটেবিল বৈঠকে ইয়েলেন বলেন, ‘জলবায়ু অর্থায়নে আমাদের সমন্বয়হীনতার সংকট চলছে। বিশ্বে সবচেয়ে বেশি কার্বণ নিঃসরণকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। একই সঙ্গে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতেও আমরাই সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ করেছি। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় একসঙ্গে নেতৃত্ব দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। সে সক্ষমতা আমাদের রয়েছে।’

ইয়েলেন বলেন, ‘বর্তমান বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে শীর্ষে জলবায়ু পরিবর্তন। অস্তিত্বের সংকট তৈরি করা অন্যতম এ চ্যালেঞ্জ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনকে অবশ্যই একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’