সামরিক মহড়ার মধ্যে তাইওয়ানের জলসীমায় রকেট ছুড়েছে চীন
তাইওয়ানের উত্তর ও দক্ষিণ উপকূলের কাছের জলসীমার দিকে রকেট ছুড়েছে চীন। একই সঙ্গে দ্বীপটিকে অবরুদ্ধ করার মহড়ার অংশ হিসেবে নতুন উভচর যুদ্ধজাহাজ, বোমারু বিমান ও ডেস্ট্রয়ার মোতায়েন করেছে দেশটি। আজ মঙ্গলবার এখন পর্যন্ত নিজেদের সবচেয়ে বিস্তৃত সামরিক মহড়ার দ্বিতীয় দিনে এসব কার্যক্রম চালিয়েছে চীন।
চীনের ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড জানিয়েছে, স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত লাইভ-ফায়ারিং চলবে। এর ফলে তাইওয়ানের চারপাশের সমুদ্র ও আকাশসীমার পাঁচটি স্থানে প্রভাব পড়তে পারে। একই সঙ্গে তারা একটি ভিডিও প্রকাশ করে, যেখানে চীনের অজ্ঞাত একটি স্থান থেকে সমুদ্রে রকেট নিক্ষেপ করতে দেখা যায়, যা দেখতে স্থানান্তরযোগ্য পিসিএইচ-১৯১ রকেট লঞ্চার বলে মনে হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সকালে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দ্বীপটির উত্তরে সরাসরি গোলাবর্ষণের অনুশীলন হয়েছে। এর ফলে ধ্বংসাবশেষ ২৪ নটিক্যাল মাইল দূরের সীমানা অঞ্চলে ঢুকে পড়েছে। চীন অনুশীলনের জন্য নির্ধারিত অন্যান্য এলাকায়ও রকেট ছুড়েছে কি না, সেটি তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স। তবে চীনের ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড জানিয়েছে, তারা তাইওয়ানের উত্তর ও দক্ষিণে সমুদ্রের দিকে রকেট ছুড়েছে।
চীনের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, দ্বীপটির চারপাশে সাবমেরিনবিধ্বংসী প্রতীকী হামলা চালানো হয়েছে।
১১ দিন আগে তাইওয়ানের জন্য রেকর্ড ১ হাজার ১০১ কোটি মার্কিন ডলারের অস্ত্র প্যাকেজের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এরপরই ‘জাস্টিস মিশন-২০২৫’ নামের এই সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। এটি এখন পর্যন্ত তাইওয়ানের সবচেয়ে কাছাকাছি পরিচালিত সামরিক মহড়া।
তাইওয়ানের একজন জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, বেইজিং সম্ভবত এই মহড়াগুলো করছে স্থলভিত্তিক লক্ষ্য, যেমন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি হিমার্স ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাকে আঘাত করার প্রশিক্ষণের জন্য। এটি গাড়িতে স্থাপনের মতো ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা, যার পরিসর প্রায় ৩০০ কিলোমিটার এবং এটি দক্ষিণ চীনের উপকূলীয় লক্ষ্যগুলোতে আঘাত করতে সক্ষম।
চীনের পিসিএইচ-১৯১ হলো একটি উন্নত দীর্ঘ পরিসরের রকেট লঞ্চার, যার আঘাতের পরিসর হিমার্স ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার সমতুল্য। চীনের সরকারি সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, এই রকেট ব্যবস্থা তাইওয়ানের যেকোনো স্থানে আঘাত করতে সক্ষম।
তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে ফেসবুকে একটি পোস্টে বলেন, সশস্ত্র বাহিনী দ্বীপ রক্ষায় প্রস্তুত রয়েছে। তবে তাইপে পরিস্থিতি উত্তেজিত করতে চায় না।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক চিন্তক প্রতিষ্ঠান ডিফেন্স প্রায়োরিটিজের এশিয়া প্রোগ্রামের পরিচালক লাইল গোল্ডস্টাইন বলেছেন, ‘আমি দেখতে পাচ্ছি, এসব মহড়ায় বাস্তবতার মাত্রা বাড়ছে এবং সাহসিকতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। অধিক অস্ত্র কেনা মনে হতে পারে সমস্যার সহজ সমাধান, কিন্তু আসলে তা মোটেই নয়। এটি এমন একটি অস্ত্রের দৌড়, যা তাইওয়ান কখনোই জিততে পারবে না।’