টানা দ্বিতীয় বছর কমল চীনের জনসংখ্যা, অর্থনীতিতে কী বার্তা দিচ্ছে

ভারতের কাছে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার দেশের তকমা হারিয়েছে চীনফাইল ছবি: এএফপি

টানা দ্বিতীয় বছরের মতো কমেছে চীনের জনসংখ্যা। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিতে জনমিতিক এ পরিবর্তন তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান দপ্তর (এনবিএস) আজ বুধবার জনসংখ্যার হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে। সংস্থাটি বলছে, ২০২৩ সালে দেশটির জনসংখ্যা কমে ১৪০ কোটি ৯০ লাখে নেমে এসেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ২০ লাখ ৮০ হাজার কম।

এনবিএস নিশ্চিত করেছে, গত বছর চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছিল ৫ দশমিক ২ শতাংশ। দেশটির সরকার ২০২৩ সালে ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল। ২০২২ সালের তুলনায় গত বছর চীনের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। ওই বছর মাত্র ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধির দেখা পেয়েছিল চীনা অর্থনীতি। যদিও গত তিন দশকের বেশি সময়ের মধ্যে এখন চীনের অর্থনীতি সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে রয়েছে।

চীনে জন্মহার রেকর্ড পরিমাণে কমেছে। এনবিএসের তথ্যানুযায়ী, গত বছর দেশটিতে প্রতি এক হাজার জনের বিপরীতে শিশুর জন্মহার ৬ দশমিক ৩৯। ২০২২ সালেও এ হার ছিল ৬ দশমিক ৭৭। ১৯৪৯ সালে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশটিতে এটিই সবচেয়ে কম জন্মহারের রেকর্ড।

২০২৩ সালে চীনে ৯০ লাখ ২০ হাজার শিশুর জন্ম হয়েছে বলে জানিয়েছে এনবিএস। আগের বছর দেশটিতে ৯৫ লাখ ৬০ হাজার শিশুর জন্ম হয়েছিল।

আরও পড়ুন

চীনের অর্থনীতির জন্য বড় উদ্বেগের বিষয় শ্রমশক্তি কমতে থাকা। দেশটিতে ১৬ থেকে ৫৯ বছর বয়সী শ্রমশক্তি ২০২২ সালের তুলনায় গত বছর ১ কোটি ৭ লাখ ৫০ হাজার কমেছে। অন্যদিকে ৬০ বছরের বেশি বয়সীদের সংখ্যা ২০২২ সালের তুলনায় বেড়েছে ১ কোটি ৬৯ লাখ ৩০ হাজার।

কয়েক দশক পর ২০২২ সালে প্রথমবারের মতো চীনের জনসংখ্যা কমে যায়। বিশ্লেষকদের মতে, ১৯৬১ সালে মাও সে-তুংয়ের আমলের দুর্ভিক্ষের পর ২০২২ সালে দেশটির জনসংখ্যা প্রথমবার কমে যায়। এ ছাড়া গত বছর ভারতের কাছে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার দেশের তকমা হারায় চীন।

দশকের পর দশক ধরে সন্তান নেওয়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করে রেখেছিল চীন। ‘এক সন্তান নীতি’ মেনে চলছিল দেশটি। কিন্তু জনসংখ্যা কমতে শুরু করায় বিবাহিত দম্পতিদের বেশি বেশি সন্তান নিতে সরকারের পক্ষ থেকে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। এরপরও জন্মহার বাড়াতে পারছে না বেইজিং।

কয়েক দশকের পুরোনা এবং আলোচিত-সমালোচিত ‘এক সন্তান নীতি’ থেকে ২০১৫ সালে সরে আসে চীন। দেশটির সরকার বুঝতে পারে, এ নীতির ফলে শিশুর জন্ম কম হচ্ছে। বয়স্ক মানুষের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। কমছে শ্রমশক্তি। এ পরিস্থিতি দেশের আর্থসামাজিক স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই চীনা প্রশাসন ওই নীতি থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নেয়।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন