‘অপরাধের স্বর্গ’ না হতে যুক্তরাষ্ট্রকে আহ্বান চীনের

চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা
ছবি : রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রকে অপরাধীদের আশ্রয়স্থল ও তাদের সম্পদ রাখার স্বর্গ না হতে আহ্বান জানিয়েছে চীন। গতকাল শুক্রবার চীনের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে এ আহ্বান জানানো হয়। এর পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে আটক পাঁচ চীনা বংশোদ্ভূত নাগরিকের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করা হয়।

বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রে পাঁচ চীনা ‘এজেন্ট’ গ্রেপ্তার হয়েছেন। বেইজিংয়ের বিরোধীদের লক্ষ্য করে অভিযান পরিচালনায় ভূমিকার জন্য গত বুধবার তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জানান।  ‘ফক্স হান্ট’ নামে পরিচিত অবৈধ চীনা অভিযানের সঙ্গে জড়িত আট ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

চীন বহু বছর ধরে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অংশ হিসেবে বিদেশে চুরি করে নেওয়া অর্থ পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করে আসছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, রাষ্ট্রপতি সি চিনপিং প্রায় এক দশক আগে দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করার পর থেকে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের সন্ধানে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা পাওয়ার চেষ্টা করছে দেশটি।

যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেছেন, বুধবার পাঁচজন চীনা এজেন্টকে গ্রেপ্তার করেছে যুক্তরাষ্ট্র যাদের মধ্যে একজন ব্যক্তিগত তদন্তকারীও রয়েছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে চীনের অবৈধ এজেন্ট হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে তিনজনকে নিউইয়র্ক ও নিউজার্সি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয় ক্যালিফোর্নিয়া থেকে। চীনের এজেন্ট হিসেবে কাজ করার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ প্রমাণিত হলে আসামিদের সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেছেন ‘যুক্তরাষ্ট্রের অবশ্যই ভিত্তিহীন অভিযোগ বন্ধ করা উচিত। পালানো অপরাধীদের অনুসরণ করতে এবং চুরি করা অর্থ ফেরাতে চীনা প্রচেষ্টার চর্চা করা উচিত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা এবং প্রতিশ্রুতি মেনে চলার জন্য অনুরোধ করছি। অপরাধীদের অযৌক্তিক লোভ দেখানো বন্ধ করতে এবং অপরাধীদের অবৈধ সম্পদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল না হতে আহ্বান জানাচ্ছি।’

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে আটক ব্যক্তিদের কেউই চীনের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য নন। তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ গুজব ও অপপ্রচার।

২০১৪ সালে ‘স্কাই নেট’ নামে একাধিক সংস্থা পরিচালিত একটি কর্মসূচি চালু করে চীন, যার মাধ্যমে বিদেশে পলাতক অপরাধীদের ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা যায়।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তি নেই। এতে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোনো দেশের পক্ষ থেকে অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসকে অবহিত করতে হয়।