উইঘুর নিয়ে আলোচনা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত: চীন

উইঘুরসহ অন্য মুসলিম সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে চীন মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠন করছে বলে অভিযোগ রয়েছে
ছবি: রয়টার্স

চীনের উইঘুর মুসলিমদের সহযোগিতা করতে আয়োজিত আলোচনায় যোগ না দিতে জাতিসংঘের অন্য সদস্যদেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে চীন। এ–সংক্রান্ত নথি থেকে গতকাল শুক্রবার এ তথ্য জানতে পেরেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য। আগামী বুধবার ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠিত হবে এ আলোচনা। এতে যোগ দেবেন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের নির্বাহী পরিচালক কেন রথ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ড। জিনজিয়ানে বসবাসরত তুর্কি জাতিসত্তার মানুষদের জাতিসংঘ, এর সদস্যদেশ ও নাগরিক সমাজ কীভাবে সহযোগিতা করতে পারে, এ নিয়ে আলোচনা হবে।

কিন্তু চীন বলছে উল্টো কথা। গত বৃহস্পতিবার তারা জাতিসংঘের বিভিন্ন সদস্যদেশকে নোট দিয়ে বলেছে, ‘এই অনুষ্ঠান রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। চীনবিরোধী এই অনুষ্ঠান যোগ না দেওয়ার জন্য জাতিসংঘে আপনাদের মিশনকে যোগ না দেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।’

বুধবারের এই অনুষ্ঠানে সহ–আয়োজক হিসেবে রয়েছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এবং অস্ট্রেলিয়া ও কানাডা। চীন বলছে, এই দেশগুলো মানবাধিকারকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।

সম্প্রতি উইঘুর ইস্যুতে চীনের ওপর আরও চাপ বাড়ানোর চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন গত সপ্তাহে বলেছেন, চীন আগের চেয়ে আরও বেশি দমনমূলক ও আগ্রাসী আচরণ করছে। শক্তি বৃদ্ধি ও প্রভাব বিস্তার করতে গিয়ে এমন আচরণের মাধ্যমে দেশটি বিশ্বব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘কয়েক বছর ধরে আমরা দেখছি, চীন নিজ দেশে আগের চেয়ে বেশি দমনমূলক আচরণ করছে। আর বাইরের দেশগুলোর সঙ্গে চীনের আচরণ আরও আগ্রাসী হয়েছে।’

চীনের জিনজিয়ান অঞ্চলের জনমিতি বদলে দিতে চায় দেশটির সরকার। এই লক্ষ্যের অংশ হিসেবে তারা ব্যাপকভিত্তিক কর্মপ্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এই কর্মপ্রকল্প জিনজিয়ানে সংখ্যালঘু মুসলিম উইঘুর সম্প্রদায়ের জনঘনত্ব কমাচ্ছে। উচ্চপর্যায়ের একটি গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে বলে বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়।

সম্প্রতি চীনা গবেষণাটি বিবিসির দেখার সুযোগ হয়েছে। সেই গবেষণার তথ্যের আলোকে বিবিসির খবরে বলা হয়, উইঘুর ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের হাজারো মানুষকে অন্যত্র স্থানান্তরের একটি নীতি বাস্তবায়ন করছে চীন সরকার। ব্যাপকভিত্তিক কর্মসংস্থান প্রকল্পের আওতায় লোকজনকে জিনজিয়ান থেকে দূরের স্থানে স্থানান্তর করা হচ্ছে। ফলে, জিনজিয়ানে লোকসংখ্যা কমছে।

তবে জিনজিয়ান অঞ্চলের জনমিতি বদলে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ অস্বীকার করছে চীন সরকার। তাদের ভাষ্য, লোকজনের আয় বৃদ্ধি, দীর্ঘস্থায়ী গ্রামীণ বেকারত্ব ও দারিদ্র্য দূরীকরণের লক্ষ্যে জিনজিয়ান থেকে লোকজনকে অন্যত্র স্থানান্তর করা হচ্ছে।