করোনার উৎপত্তি নিয়ে সব ধারণা খতিয়ে দেখবে ডব্লিউএইচও

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস
ছবি: রয়টার্স

করোনাভাইরাসের উৎপত্তি নিয়ে সব ধরনের ধারণাকেই বিবেচনায় রাখছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটির  প্রধান তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস গত শুক্রবার জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেছেন।

চীনের উহান শহরের গবেষণাগার থেকে করোনাভাইরাসের উৎপত্তি এমন ধারণার বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করতে ডব্লিউএইচওর একটি দল সেখানে যায়। তদন্ত শেষে দলটি ফেরার পর এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। তেদরোসের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন উহানে তদন্তদলের নেতৃত্ব দেওয়া পিটার বেন এমবারেক।

সংবাদ সম্মেলনে তেদরোস বলেন, ‘গবেষক দলটি কঠিন পরিস্থিতিতে খুব গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা–নিরীক্ষা চালিয়েছে। কিছু ধারণা বাদ দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তদন্তদলের কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে কথা বলেছি। আমি নিশ্চিত করে বলছি যে সব ধারণাই উন্মুক্ত রাখা হচ্ছে। এগুলো নিয়ে আরও বেশি বিশ্লেষণ ও গবেষণা দরকার।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান আরও বলেন, ‘আমরা বরাবরই বলে আসছি এ তদন্ত মিশনে সব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে না। তবে এটি আমাদের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে, যাতে আমরা ভাইরাসটির উৎস সম্পর্কে জানার কাছাকাছি যেতে পারি। এ মিশন করোনা মহামারি শুরুর দিকের পরিস্থিতি আরও ভালোভাবে বুঝতে সহায়তা করেছে।

পাশাপাশি আরও কোন কোন দিকে গবেষণা হতে পারে, তা নির্ধারণে সাহায্য করেছে। যেসব প্রশ্নের উত্তর এখনো পাওয়া যায়নি, তা খুঁজতে আমরা কাজ চালিয়ে যাব।’

বিশেষজ্ঞ দল চীনে গিয়ে করোনার উৎস শনাক্ত করতে না পারলেও উহান শহরের গবেষণাগার থেকে করোনাভাইরাসের উৎপত্তির ধারণা নাকচ করে দেয়। গত মঙ্গলবার বেন এমবারেক উহানে সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘উহানের গবষেণাগার থেকে করোনার উৎপত্তির ধারণা একেবারেই অসম্ভব। তাই ভবিষ্যতে এ নিয়ে গবেষণার পক্ষে আমরা না।’

তেদরোস বলেন, তিনি আশা করছেন, বিশেষজ্ঞ দলের তদন্ত প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ আগামী সপ্তাহে প্রকাশিত হবে। এরপর বিস্তারিত প্রতিবেদন পাওয়া যাবে।

করোনা বিপর্যয়ের সূত্রপাত চীনের উহান শহর থেকে। ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনের কর্তৃপক্ষ ২৭ জনের ‘ভাইরাল নিউমোনিয়ায়’ আক্রান্ত হওয়ার কথা জানায়। ৭ জানুয়ারি দেশটির কর্মকর্তারা এটাকে নতুন ভাইরাস হিসেবে শনাক্ত করেন। ১১ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ভাইরাসটির নাম দেয় ২০১৯-এনকভ (কোভিড-১৯)। ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার পর হাসপাতালগুলোতে রোগীর ঢল নামে। এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে সারা বিশ্বে ২৩ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, করোনাভাইরাসের উৎস বাদুড়। এরপর অন্যান্য প্রাণীর মাধ্যমে ভাইরাসটি মানুষের শরীরে প্রবেশ করে।