‘চীন সরকার আমার মুখ বন্ধ করে দেয়’

উহান সেন্ট্রাল হাসপাতাল
ফাইল ছবি: রয়টার্স

চীনের উহান হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেছেন, তিনি ও তাঁর সহকর্মীরা গত বছরের জানুয়ারির শুরুতেই সন্দেহ করেছিলেন যে ছড়িয়ে পড়া ভাইরাসটি অতি সংক্রামক। কিন্তু এ ব্যাপারে কাউকে সতর্ক করা থেকে তাঁদের নিবৃত্ত করে কর্তৃপক্ষ।

বিবিসির নতুন একটি তথ্যচিত্রে এই কথা বলেন উহান হাসপাতালের নাম প্রকাশ না করা ওই চিকিৎসক।

প্রথম করোনা শনাক্ত ও উহান লকডাউনের মধ্যবর্তী ৫৪ দিন নিয়ে বিবিসি ‘৫৪ ডেজ’ নামের তথ্যচিত্রটি করেছে। তথ্যচিত্রটিতে উহানের ওই চিকিৎসকের ভাষ্য এ কথাই জোরালো করে যে, শুরুর দিকে বেইজিং করোনাভাইরাসের বিস্তারের বিষয়টিকে ধামাচাপা দিতে চেয়েছিল। শুধু তা-ই নয়, এ নিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের চুপ থাকতে কর্তৃপক্ষ ভয়–ভীতিও দেখিয়েছিল।

তথ্যচিত্রটিতে বলা হয়, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে উহানে প্রথম করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ে। উহানের একটি বাজার থেকে করোনা ছড়ায় বলে ধারণা করা হয়। সেই বাজার থেকে উহান সেন্ট্রাল হাসপাতালের দূরত্ব কয়েক কিলোমিটার। প্রথম করোনা শনাক্ত হওয়ার পর খুব দ্রুতই উহান হাসপাতাল রোগীতে ভরে ওঠে। হাসপাতালটির ২০০ জনের বেশি কর্মী করোনায় সংক্রমিত হন। চিকিৎসকসহ অনেকে মারাও যান।

উহান হাসপাতালের নাম প্রকাশ না করা ওই চিকিৎসক বলেন, ১০ জানুয়ারির মধ্যে হাসপাতালের শ্বাসতন্ত্রের রোগ বিভাগ রোগীতে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল। তাঁরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন।

ওই চিকিৎসক বলেন, কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ বিষয় নিয়ে কারও সঙ্গে কোনো কথা বলার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। এমনকি তাঁরা তাঁদের মাস্ক পর্যন্ত পরতে দেয়নি।

ওই চিকিৎসক বলেন, সবাই জানতেন, এই ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত হয়। এমনকি একটা বোকাও এ কথা জানতেন।

ওই চিকিৎসকের ভাষ্য, পরিস্থিতি গুরুতর হওয়া সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ তাঁদের চুপ থাকতে বাধ্য করে। এতে তাঁরা ক্ষুব্ধ হন।

উহানে করোনার উৎপত্তির পর কর্তৃপক্ষের বিলম্বিত সাড়া, সংক্রমণের ভয়াবহতা উপেক্ষা, তথ্য গোপনের মতো অভিযোগ আগেও প্রকাশিত হয়েছে।