চীনে অবসর নেওয়ার বয়স বাড়ছে

চীনে বয়স্ক লোকের সংখ্যা বাড়ছে
ছবি: রয়টার্স

অবসর নেওয়ার বয়স বাড়াচ্ছে চীন। দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন পরিকল্পনার আওতায় দেশটির কমিউনিস্ট পার্টি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অনেকেই।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে চীনের ১৪০ কোটি মানুষের মধ্যে ২৫ কোটি মানুষের বয়স ছিল ৬০ বছরের ওপরে। থিঙ্কট্যাংক বলছে, দেশটির ১৭ দশমিক ৮ শতাংশের বেশি মানুষের বয়স ৬০ বছরের বেশি, যা ২০৫৩ সাল নাগাদ ৩৩ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে।

চীনের ২০৩৫ সালের লক্ষ্যমাত্রার বিষয়টি উল্লেখ করে রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া এ মাসে এক প্রতিবেদনে বলেছে, কর্তৃপক্ষ ধীরে ধীরে অবসরের বয়স বাড়িয়ে দেওয়ার বিষয়টি বাস্তবায়ন করবে। ওই প্রতিবেদনে অবসরের বয়স বাড়ানোর বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়নি। তবে তা নিয়ে মানুষের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ওয়েবুতে একজন লিখেছেন, ‘অবসরের সময় বাড়ালে পেনশনের অর্থ পেতে দেরি হবে।’

চার দশকের বেশি সময় ধরে চীনের অবসরকালীন বয়সসীমার কোনো পরিবর্তন হয়নি। এ ক্ষেত্রে সরকারি চাকরিতে পুরুষের জন্য ৬০ বছর ও নারীদের জন্য ৫৫ বছর নির্ধারিত রয়েছে। ২০১৩ সাল থেকে বয়স বাড়ানোর পরামর্শ গৃহীত হলেও এখনো তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। এতে জনগণ তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে আসছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আরেকজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘অবসরে দেরি করানোর কোনো প্রয়োজনীয়তা বা যুক্তি নেই।’

বিশেষজ্ঞদের মতে, চীন মূলত জনসংখ্যাতাত্ত্বিক টাইমবোমার মুখোমুখি। দেশটিতে বয়স্ক মানুষ বেড়ে যাচ্ছে এবং কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা কমছে। চার দশকের বেশি সময় ধরে চীন যে এক সন্তান নীতি গ্রহণ করেছিল, তার ফল এখন ভোগ করছে।

গতকাল দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সিকিউরিটিজ টাইমস বলেছে, অবসর নেওয়ার বয়স বাড়ানোর বিষয়টি অবশ্যম্ভাবী নিয়ম হতে যাচ্ছে। কেউ যদি বাইরে ভ্রমণ করেন, তবে দেখবেন ৬০ বছরের বেশি বয়সী অনেক মানুষ এখন কাজ করছেন, যা স্বাভাবিক। অনেক দেশের তুলনায় চীনে অবসর নেওয়ার বয়স কম। জাপানে তা ৬৫ বছর। গত বছর সিনজো আবের সরকার জাপানে অবসর নেওয়ার বয়স ৭০, এমনকি ৭৫ বছর করার চিন্তা করছিল।

দক্ষিণ কোরিয়ায় ২০৩০ সাল নাগাদ ২৫ শতাংশের বেশি মানুষের বয়স ৬৫ পেরিয়ে যাবে। সেখানে পুরুষের অবসর নেওয়ার বয়স ৬৮ আর নারীদের ৬৭ বছর।

চীনের বয়স্ক মানুষ বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি দেশটির পেনশন পদ্ধতির ওপর চাপ বাড়াচ্ছে। দেশটির একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ২০৩৫ সাল নাগাদ দেশটির পেনশন ফান্ড অসচ্ছল হয়ে যেতে পারে।